অতিরিক্ত ভিড় ও কর্মীদের কর্মবিরতিতে সাময়িকভাবে বন্ধ ল্যুভর জাদুঘর

বিশ্ববিখ্যাত ফ্রান্সের ল্যুভর জাদুঘর সোমবার হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায়। যুদ্ধ বা সন্ত্রাস নয়, বরং অতিরিক্ত দর্শনার্থীর চাপ ও কর্মীদের ক্লান্তির প্রতিবাদেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জাদুঘরের কর্মীরা জানান, সীমাহীন ভিড়, কর্মী সংকট ও কাজের পরিবেশের অবনতি তাঁদের এই কর্মবিরতির মূল কারণ।
জাদুঘরের প্রবেশমুখের কাচের পিরামিডের পাশে হাজারো পর্যটক লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই জাদুঘর বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে হতাশ হন বহু দর্শনার্থী। যুক্তরাষ্ট্রের কেভিন ওয়ার্ড বলেন, "এখানে এসে মনে হলো যেন মোনালিসাও আজ বিশ্রামে আছে।"
গত বছর প্রায় ৮৭ লাখ মানুষ ল্যুভর ভ্রমণ করেন, যা জাদুঘরের ধারণক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি। প্রতিদিন ৩০ হাজার দর্শনার্থীর সীমা নির্ধারণ করেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। কর্মীদের অভিযোগ, বিশ্রামের জায়গার অভাব, সীমিত টয়লেট সুবিধা এবং প্রবেশমুখের কাচের পিরামিডের কারণে তৈরি উত্তপ্ত পরিবেশ তাঁদের দৈনন্দিন কাজকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।
২০১৯ ও ২০১৩ সালেও কিছু সময়ের জন্য জাদুঘর বন্ধ হয়েছিল ভিড় ও নিরাপত্তাজনিত কারণে। তবে এবারকার ঘটনা আলাদা, কারণ তা এসেছে সরাসরি কর্মীদের উদ্যোগে।
ল্যুভরের সংস্কার ও আধুনিকায়নের জন্য ৭০০ থেকে ৮০০ মিলিয়ন ইউরো প্রয়োজন, যা টিকিট বিক্রি, অনুদান ও রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের পর্যটকদের জন্য চলতি বছরেই টিকিটের দাম বাড়তে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
তবে কর্মীরা বলছেন, ভবিষ্যতের বড় পরিকল্পনার চেয়ে বর্তমান চাহিদা পূরণই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, দশকের শেষ নাগাদ ল্যুভরকে একটি নিরাপদ ও আধুনিক জাদুঘরে রূপান্তর করার পরিকল্পনা থাকলেও, এই ঐতিহাসিক জাদুঘর এখন এক অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড়িয়ে আছে।