লালমনিরহাটে লাম্পি স্কিন ডিজিজের প্রাদুর্ভাব, আতঙ্কে খামারিরা

ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা জেলা লালমনিরহাটে হঠাৎ করেই ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD)। ভাইরাসজনিত এই রোগে ইতোমধ্যে হাজারো গরু ও মহিষ আক্রান্ত হয়েছে। ওষুধেও প্রতিক্রিয়া না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন জেলার খামারি ও গবাদিপশু পালনকারী কৃষকরা।
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্যমতে, লাম্পি স্কিন ডিজিজ মানুষের জন্য ক্ষতিকর না হলেও গবাদিপশুর জন্য এটি অত্যন্ত সংক্রামক ও প্রাণঘাতী। এক পশু থেকে আরেক পশুতে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে আক্রান্ত পশুর জ্বর হয়, ত্বকে গুটি ওঠে, শরীর ফুলে যায়, মুখ দিয়ে লালা ঝরে এবং ধীরে ধীরে পশুটি দুর্বল হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে খাদ্যগ্রহণ বন্ধ হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকিও তৈরি হয়।
জেলায় প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত পশুর সংখ্যা। এ অবস্থায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর মাঠপর্যায়ে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। খামারিদের সংক্রমণ প্রতিরোধ, আলাদা রাখার পদ্ধতি ও প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তবে অনেক খামারির অভিযোগ— নির্ধারিত চিকিৎসা কার্যকর হচ্ছে না এবং চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে ক্ষুদ্র খামারি ও কৃষকেরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
স্থানীয় খামারিদের দাবি, গত ঈদের আগে ভারতীয় সীমান্ত পেরিয়ে আসা গরুর মাধ্যমেই এ রোগ ছড়িয়েছে। বিশেষ করে ভারতের সীমান্তসংলগ্ন পাটগ্রাম উপজেলা ও আশপাশের গ্রামগুলোতে সংক্রমণের হার বেশি।
হাতীবান্ধার বড়খাতা এলাকার খামারি একরামুল বলেন, “এই রোগে গরুগুলো খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়। ওজন কমে যায়। আমরা খুব অসহায় হয়ে পড়েছি। সরকারের কাছে অনুরোধ, যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেছি। আক্রান্ত পশুদের আলাদা করে রাখা, পরিচর্যার পদ্ধতি এবং প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, আগামী ১০–১৫ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।”