সুড়ঙ্গ পথে পালিয়ে ফাঁস হলো ‘আয়নাঘর’ রহস্য, আদালতে স্বীকারোক্তি

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার আলোচিত ‘মিনি আয়নাঘর’ কাণ্ডে আটক বাড়ির মালিক সুমন সেখ (২৩) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেলে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১-এর বিচারক আলমগীর হোসেন ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এর আগে, সোমবার (১২ মে) রাতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলী বাজার এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে হাজির করা হলে তিনি দীর্ঘ সময় ধরে জবানবন্দি দেন। এরপর আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সুমনের বাড়ি রায়গঞ্জ উপজেলার সোনারাম মধ্যপাড়ায়। তিনি ওই আলোচিত ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত বাড়ির মালিক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, জেলা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হক রতন জানান, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সুমন বলেন, পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাত তার বাড়ির নিচতলায় দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে সেখানেই দুইজন নারী ও পুরুষকে বন্দি করে রাখতেন। সুমন নিজেই নিয়মিত তাদের খাবার সরবরাহ করতেন। শুধু আরাফাত নয়, আরও কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি নিয়মিতভাবে ওই আয়নাঘরে যাতায়াত করতেন বলে জানান তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ১ মে, গভীর রাতে। ওই সময় বন্দিদশায় থাকা পূর্ব পাইকড়া গ্রামের আব্দুল জব্বার (৭৫) ও লক্ষ্মী বিষ্ণু প্রসাদ গ্রামের শিল্পী বেগম (৪৮) নিজেরা মাটি খুঁড়ে তৈরি করা একটি সুড়ঙ্গপথ ব্যবহার করে পালিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। এরপরই ঘটনাটি জনসমক্ষে আসে এবং এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার পরদিন উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
ভুক্তভোগী আব্দুল জব্বারকে গত বছরের ৮ নভেম্বর এবং শিল্পী বেগমকে ১২ ডিসেম্বর অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় তাদের স্বজনরা পৃথক দুটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। উভয় মামলায় সুমন সেখ ও পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাতকে আসামি করা হয়। ইতোমধ্যে আরাফাতকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় ডিবি।