আইএমএফ ঋণের কিস্তি ছাড়ে অনিশ্চয়তা, ফের আলোচনা চায় সংস্থা

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের আগে পর্যালোচনার কাজ শেষ করলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পূর্বে আরও এক দফা আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। ৫ মে (সোমবার) অনলাইনে এই বৈঠকে অংশ নেবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দৈনিক সূচিতেও বৈঠকের উল্লেখ রয়েছে।
আইএমএফ প্রতিনিধি দল ১৮ এপ্রিল তাদের দুই সপ্তাহের পর্যালোচনা সফর শেষ করলেও কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই ঢাকা ত্যাগ করে। তখন সংস্থার মিশনপ্রধান ক্রিস পাপাজর্জি জানান, আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা হবে।
ঋণের কিস্তি ছাড় নিয়ে ২১-২৬ এপ্রিল ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত সেই বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও গভর্নর আইএমএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দেশে ফিরে অর্থ উপদেষ্টা জানান, আইএমএফের সব শর্ত বাংলাদেশ মানতে রাজি নয়। “আমরা স্থিতিশীল। তাই তাদের সব শর্ত মানতে হবে—এটা নয়,” বলেন তিনি।
ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ে আইএমএফ যে শর্তগুলো জোর দিয়ে বলছে, তার মধ্যে রয়েছে—মুদ্রানীতির আরও সংকোচন, মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা এবং নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ। তবে সালেহউদ্দিন আহমেদ পুরোপুরি বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর বিরোধিতা করেছেন।
অন্যদিকে এনবিআরকে রাজস্ব বাড়ানোর পাশাপাশি প্রশাসনিক সংস্কার এবং কর আদায়ে ডিজিটাল প্রক্রিয়া চালুর শর্ত মানতে বলা হয়েছে। এছাড়া সঞ্চয়পত্রের সুদে ভর্তুকি কমানো ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি হ্রাসের দাবিও রয়েছে আইএমএফের।
নতুন আলোচনার এই বৈঠকটি হতে পারে ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগের শেষ সভা। দুই পক্ষ সমঝোতায় পৌঁছাতে পারলে জুনেই বাংলাদেশ পেতে পারে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ।
এদিকে এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান জানিয়েছেন, ৫ মে আলোচনার পরে ২৩ মে আইএমএফ বোর্ড সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি করে বাংলাদেশ। এরইমধ্যে তিন কিস্তিতে পাওয়া গেছে ২৩১ কোটি ডলার, বাকি রয়েছে ২৩৯ কোটি ডলার।