ইরানি হামলার পর ব্যাহত বিমান চলাচল, আকাশসীমা খুলছে দেশগুলো

কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানি হামলার পর বিশ্বজুড়ে বহু ফ্লাইট বাতিল ও পথ পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় বিমান সংস্থাগুলো।
কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল–উদেইদ সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ সোমবার সতর্কতামূলকভাবে তাদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। ফলে আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থাকে ফ্লাইট বাতিল ও গন্তব্য পরিবর্তন করতে হয়।
এর আগে রোববার যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালালে পাল্টা জবাবে ইরান সোমবার দোহার মার্কিন ঘাঁটিতে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। হতাহতের কোনো খবর না মিললেও আকাশপথে এর প্রভাব পড়ে দ্রুত।
আকাশসীমা বন্ধের কারণে দোহা, দুবাই, বাহরাইন ও কুয়েতগামী অসংখ্য ফ্লাইট বাতিল বা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এয়ার ইন্ডিয়া ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকামুখী ফ্লাইট স্থগিত করে। কুয়েত এয়ারওয়েজ, ইতিহাদ, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস, এয়ার ফ্রান্স, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজসহ অনেক বিমান সংস্থাও একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়। দোহাগামী দুই ডজনের বেশি ফ্লাইট পথ পরিবর্তন করে, বেশির ভাগই কাতার এয়ারওয়েজের।
বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত আকাশপথ — ইরান, ইরাক থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত অঞ্চলে বাণিজ্যিক বিমানের চলাচল প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। অনেক বিমান এখন বিকল্প পথে, যেমন কাস্পিয়ান সাগর হয়ে উত্তরে বা মিসর–সৌদি আরব ঘুরে দক্ষিণ দিয়ে যাতায়াত করছে।
বিমান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে ইরান ও তাদের মিত্রদের ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কা বাড়ছে। একইসঙ্গে, পারস্য উপসাগরে জিপিএস বিভ্রাট বা ‘স্পুফিং’-এর ঘটনাও বেড়েছে। সুইস প্রতিষ্ঠান SKAI জানিয়েছে, রোববার রাত পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ওই এলাকায় ১৫০টির বেশি বাণিজ্যিক বিমানে জিপিএস বিভ্রাট শনাক্ত হয়েছে।
তবে ইরান–ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কুয়েত, বাহরাইন ও কাতার আকাশসীমা খুলে দিয়েছে। দুবাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্বল্প সময়ের বিরতির পর কার্যক্রম আবার চালু হয়েছে।
এদিকে, দোহায় হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে পড়া এক ব্যবসায়ী যাত্রী মিরেত পাদোভানি বলেন, ‘সবকিছু এত দ্রুত ঘটে গেল, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর সংবাদমাধ্যমে আসার আগেই লাউঞ্জে থাকা কয়েকজন যাত্রীর কাছে তা জানতে পারি।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা দীর্ঘ হলে বিমান চলাচলের খরচ ও জটিলতা আরও বাড়তে পারে।