ট্রাম্পের ঘোষণা: ইরান–ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ধাপে ধাপে কার্যকর

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ইরান–ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ধাপে ধাপে কার্যকর হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরান ও ইসরায়েল একটি “পর্যায়ক্রমিক ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে” সম্মত হয়েছে। এই সমঝোতা চলমান দ্বন্দ্বের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটাবে বলে তিনি দাবি করেন। তবে এ ঘোষণার মধ্যেই তেহরানের বিভিন্ন স্থানে রাতভর বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ স্যোশাল’-এ লিখেছেন, “ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে পূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছেছে। এটি ১২ দিনের সংঘাতের ইতি টানবে।”
কীভাবে কার্যকর হবে যুদ্ধবিরতি?
ট্রাম্প জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে যুদ্ধবিরতি ধাপে ধাপে কার্যকর হবে। প্রথম ১২ ঘণ্টায় ইরান একতরফাভাবে সামরিক অভিযান বন্ধ করবে। পরবর্তী ১২ ঘণ্টায় একই পদক্ষেপ নেবে ইসরায়েল। এরপর ২৪ ঘণ্টা শেষে দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতির উদ্যাপন হবে।
হামলা চলছেই, উদ্বেগ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে
যদিও ট্রাম্পের ঘোষণার মধ্যেই তেহরানসহ ইরানের বেশ কিছু স্থানে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। সাংবাদিকদের মতে, এটি যুদ্ধ শুরুর পর অন্যতম জোরালো হামলা। বিশ্বনেতারা এ সংঘাত নিয়ে আগে থেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ও চীন যুদ্ধের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রভাব নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানি হামলা
যুদ্ধবিরতির ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেই ইরান কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের আল-উদেইদ সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ট্রাম্প একে ‘দুর্বল’ হামলা বললেও, তেহরান জানায়—এটি ছিল মার্কিন আক্রমণের “প্রতিসম ও পরিকল্পিত” জবাব। এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ’-এর উপদেষ্টা আলি ভায়েজ বলেন, “এই হামলা এমনভাবে চালানো হয়েছে যাতে মার্কিন হতাহতের ঘটনা না ঘটে এবং উভয় পক্ষের জন্য সংঘাত থেকে সরে আসার পথ খোলা থাকে।”
কাতারের প্রতিক্রিয়া
কাতার এই হামলাকে তাদের সার্বভৌমত্বে ‘স্পষ্ট আগ্রাসন’ বলে মন্তব্য করেছে এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার রাখে বলে জানিয়েছে। যদিও কাতারের দাবি, হামলার আগে ঘাঁটিটি খালি করে ফেলা হয়েছিল।
হতাহতের তথ্য
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ইরানে পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে প্রাণ গেছে অন্তত ২৪ জনের।
আকাশসীমা বন্ধ, জনগণের প্রতিক্রিয়া
হামলার কারণে কাতার তাদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। মার্কিন দূতাবাস ও অন্যান্য দূতাবাস তাঁদের নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। আর তেহরানে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার পর রাস্তায় নেমে অনেক মানুষ উদ্যাপন করেন। তাঁরা জাতীয় পতাকা নেড়ে ‘যুক্তরাষ্ট্র নিপাত যাক’ স্লোগান দেন।