`হতাশা` শয়তানের পাঠশালার প্রথম পাঠ!

আদিকাল থেকেই সুখ-দুঃখ নিয়ে মানুষের এই পৃথিবীর পরিযাত্রা। জীবনের সঙ্গে যেন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে সুখ-দুঃখের মিলন পাখি। কখনো আগে আসে দুঃখ। তারপর দেখা মেলে সুখের ক্ষণিক ঠিকানা। আবার কারো জীবন আমৃত্যু দূখের সঙ্গেই জড়িয়ে থাকে। এই পৃথিবীতে আপনি কখনই পরিপূর্ণ সুখী হতে পারবেন না। আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালা আপনাকে যত কিছুই দান করুক না কেন? আপনি কখনই সত্যিকার অর্থে পরিতৃপ্ত হবেন না। এই দুনিয়াকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে এটা আপনার হৃদয়কে ভেঙ্গে চুরমার করে দিবে। এটাকে নকশা করা হয়েছে এভাবেই।
আপনি যদি দুনিয়ায় সুখী হওয়ার প্রত্যাশায় থাকেন, আপনি আসলে ভুল জায়গায় আছেন। আমার প্রিয় ভাইয়েরা, কীভাবে নিজেকে মূল্যহীন ভাবতে পারেন? আমার প্রিয় বোনেরা, কীভাবে নিজেকে মূল্যহীন ভাবতে পারেন? আপনি তো লাত, ওজ্জার দাস নন। আপনি তো ফ্যাশন বা অর্থের দাস নন। অথবা খ্যাতি, সৌন্দর্য, ক্ষমতা বা পদবির দাস নন। আপনি আল্লাহর দাস, আল্লাহর গোলাম। বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষের মাঝে আল্লাহ আপনাকে পছন্দ করেছেন। আল্লাহ আপনাকে পছন্দ করেছেন আর ইসলামের মাধ্যমে মহিমান্বিত করেছেন।
দুঃখ-বেদনা একমাত্র তখনি নেতিবাচক হয়, যদি এটা আপনার এবং আল্লাহ সুব হা নাহু ওয়া তায়ালার মাঝে বাধার দেয়াল তৈরি করে। আর দুঃখ-বেদনা তখন ইতিবাচক হয়ে উঠে, একটি অনুপ্রেরণা হয়ে উঠে যখন এটি আপনাকে আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালার নিকটবর্তী করে তোলে। ও আমার প্রিয় বান্দাহ! তোমার প্রভুর নিকট ফিরে আস। ও আমার প্রিয় দাস! এটি তোমার জন্য একটি স্মরণিকা এজন্য যে আমি তোমাকে আমার নিকট ফিরিয়ে আনতে চাই।
তাদের উপর কোনো ভয় নেই আর তারা দুঃখ ভারাক্রান্তও হবে না। এখনো ঘটেনি এমন কিছুতে মানসিকভাবে আতঙ্ক গ্রস্ত হয়ে পড়বেন না, এটা হল ভয়। আবার ঘটে যাওয়া কোনো দুর্ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙ্গেও পড়বেন না। সবকিছুই আল্লাহর পূর্বনির্ধারিত। মুসলমানদের জন্য দ্বীনের যে বিষয়টি মেনে নেয়া সবচেয়ে কঠিন আমাদের দ্বীনের ৬ষ্ঠ অনুচ্ছেদ- তা হল আল্লাহর কদর। আমরা এটা স্বীকার করতে চাই না। আমরা আল্লাহর ক্ষমতার কথা ভুলে যাই। আমরা আল্লাহর উপস্থিতির কথা ভুলে যাই। আমরা ভুলে যাই যে আমরা এক ফোটা নাপাক পানি থেকে এসেছি, আমাদের কোনো মূল্যই ছিল না। মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ (সা.) কে সবকিছু পরিশুদ্ধ করতে হয়ছিল, কারণ আমরা কিছুই সঠিকভাবে করছিলাম না। আমরা ভীত হয়ে পড়ি, কারণ আমরা ভুলে যাই। আমরা ভয় পাই কারণ আমরা ভুলে যাই যে সবকিছু আল্লাহর নিয়ন্ত্রণে আছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের প্রত্যেককেই পরীক্ষা করব, ধন সম্পত্তির ক্ষতির দ্বারা, জীবনের ক্ষতির দ্বারা, ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতির দ্বারা। সুতরাং ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দান করুন। আর তাদের পরীক্ষা করা হলে তারা বলে আমরা আল্লাহর জন্য এবং আল্লাহর নিকটই আমাদের প্রত্যাবর্তন। তারা সে সমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েত প্রাপ্ত।’ (সুরা বাকারা) যদি আল্লাহ আপনার উপর সন্তুষ্ট থাকেন তবে আপনি যা চান সবই আপনার আছে। আর আল্লাহ যদি আপনার উপর সন্তুষ্ট না থাকেন, তবে কোন কিছুই আপনাকে সুখী করবে না। এটা সর্বদা আপনার জন্য দুঃখ-কষ্টই বয়ে নিয়ে আসবে। আল্লাহর কসম! এটাই সত্য। এটা মিথ্যা নয়।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল