ওআইসি সম্মেলনে ফিলিস্তিন ও ইরান ইস্যুতে কড়া বার্তা বাংলাদেশের

ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

শনিবার (২১ জুন) তুরস্কের ইস্তানবুলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (OIC) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৫১তম সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এই আহ্বান জানান।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের বেআইনি ও আগ্রাসী হামলা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং ইরানের সার্বভৌমত্বের চরম লঙ্ঘন। তিনি বলেন— “ইসরায়েলের এ ধরনের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড কেবল অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করছে না, বরং বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্যও হুমকি।”

তিনি অবিলম্বে এসব উসকানিমূলক হামলা বন্ধ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি কূটনীতি ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানান।

ফিলিস্তিনে চলমান আগ্রাসনেরও তীব্র নিন্দা জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, “এই অন্যায়ের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ) এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (ICC) মাধ্যমে আইনি উদ্যোগে OIC-কে ঐক্যবদ্ধ ও সোচ্চার থাকতে হবে।”

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা সংকটও জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়।
তৌহিদ হোসেন OIC টেন ইয়ার প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন-এ রোহিঙ্গা ইস্যুকে কৌশলগত অগ্রাধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করায় ওআইসির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন— “রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের ওপর কূটনৈতিক চাপ বাড়ানো এবং ICJ-তে চলমান মামলার অর্থায়নে ওআইসির সহায়তা প্রয়োজন।”

মুসলিম বিশ্বের অভ্যন্তরীণ সংঘাত, ইসলামফোবিয়া এবং বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় ওআইসির গঠনমূলক ভূমিকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন— “প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, জবাবদিহিতা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে।”

সম্মেলনের পাশাপাশি তিনি মালয়েশিয়া, ইরাক, উজবেকিস্তান ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।
বিশেষভাবে, পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার-এর সঙ্গে আলাপ হয় দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে।

দু’দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। বিকেলে অনুষ্ঠিত বিশেষ অধিবেশনে ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলা নিয়ে গভীর আলোচনা হয়।