সিলেটে জুলাই যোদ্ধাকে মারধর, অভিযুক্ত এএসআই বরখাস্ত

জুলাই যোদ্ধা ইসলাম উদ্দিন
সিলেট নগরীতে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কর্তৃক এক গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধা ইসলাম উদ্দিন (৩০)-কে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২১ জুন) ভোরে লামাবাজার এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য এএসআই জসিম-কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একজন অতিরিক্ত উপকমিশনারকে।
ইসলাম উদ্দিন সিলেট নগরীর শেখঘাট জিতু মিয়ার পয়েন্ট এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম নুর মিয়া।
একসময় তিনি অটোরিকশা চালাতেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলিবিদ্ধ হন। এখনো তার শরীরে স্প্লিন্টার রয়ে গেছে। ফলে তিনি শারীরিকভাবে ভারী কাজ করতে পারেন না এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি চায়ের দোকান চালান।
ভুক্তভোগী ইসলাম উদ্দিন জানান, শনিবার ফজরের পর প্রতিদিনের মতো দোকান খুলেছিলেন। হঠাৎ এএসআই জসিম এসে জিজ্ঞেস করেন, “এত সকালে দোকান খোলা কেন?” এরপর কোনো কারণ ছাড়াই মারধর শুরু করেন।
ইসলাম উদ্দিন জানান, “আমি বলি, আমি একজন গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধা। আমি আহত, বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকতে পারি না। দোকান না চালালে পরিবার না খেয়ে থাকবে।”
তখন এএসআই জসিম বলেন— “তুই যোদ্ধা! তোরা তো পুলিশ মারছিস, ফাঁড়ি জ্বালাইছিস।”
এই কথা বলেই কিল, ঘুষি, থাপ্পড় মারতে মারতে তাকে জোর করে ভ্যানে তোলার চেষ্টা করা হয়। এক কনস্টেবলের হস্তক্ষেপে তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যান পুলিশ সদস্যরা।
পরে ইসলাম উদ্দিনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী জানান, “তিনি সকালে ভর্তি হয়েছেন, গুরুতর কিছু নয়। সিটি স্ক্যানসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা চলছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট আসলে বলা যাবে।”
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, “অভিযুক্ত এএসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করছেন অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর-ক্রাইম) সাহাদত হোসেন। তদন্ত শেষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সিলেট জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈছাআ) এবং জুলাই যোদ্ধাদের সহযোদ্ধারা। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।