জামালপুরে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সক্রিয়তা, নির্বাচন ঘিরে মাঠ গোছানোর প্রস্তুতি

আওয়ামী লীগ নেতারা আত্মগোপনে, রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বাড়ছে জনসংযোগ ও দল গোছানোর কাজ।
আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত জামালপুরে রাজনৈতিক চিত্র দ্রুত বদলে গেছে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর। শাসকদলের অধিকাংশ নেতা আত্মগোপনে থাকায় এখন জেলার রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
বিএনপির জেলা কার্যালয়ে এখন নিয়মিত দলের কার্যক্রম চলছে, যা আগে মামলার ভয়ে অনেকটা স্তিমিত ছিল। বিএনপির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সম্মেলন প্রক্রিয়াধীন। দলের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী জানিয়েছেন, খুব দ্রুত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে এবং সব সহযোগী সংগঠন নতুনভাবে গঠিত হবে।
জামায়াতে ইসলামীও এখন সংগঠনের নিয়মিত কার্যক্রম চালাতে পারছে। দলটির জেলা আমির মুহাম্মদ আব্দুস সাত্তার জানান, আগে সংগঠনের কার্যক্রম গোপনে চললেও বর্তমানে তা প্রকাশ্যেই চালানো হচ্ছে।
এনসিপি সম্প্রতি জামালপুরে একটি জেলা সমন্বয় কমিটি গঠন করেছে। কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব লুৎফর রহমান জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনে প্রার্থী হিসেবে এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংসদীয় আসনভিত্তিক প্রস্তুতি
জেলায় পাঁচটি সংসদীয় আসনে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে সক্রিয়। তাঁরা নিয়মিত জনসংযোগ, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন।
জামালপুর-১ (দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ)
প্রার্থী: বিএনপির রশিদুজ্জামান মিল্লাত, জামায়াতের নাজমুল হক সাইদী, সাবেক আইজিপি আব্দুল কাইয়ুম ও ইসলামী আন্দোলনের আব্দুল মজিদ।
জামালপুর-২ (ইসলামপুর)
প্রার্থী: বিএনপির এস এম আব্দুল হালিম ও সুলতান মাহমুদ, জামায়াতের ছামিউল হক ফারুকী, জাতীয় পার্টির মোস্তফা আল মাহমুদ।
জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ)
প্রার্থী: বিএনপির মোস্তাফিজুর রহমান, জামায়াতের মজিবুর রহমান, এনসিপির লুৎফর রহমান ও ইসলামী আন্দোলনের বোরহান উদ্দিন।
জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী)
প্রার্থী: বিএনপির ফরিদুল কবির তালুকদার, জামায়াতের আব্দুল আওয়াল, ইসলামী আন্দোলনের আলী আকবর, জাতীয় পার্টির মামুনুর রশিদ।
জামালপুর-৫ (সদর)
প্রার্থী: বিএনপির শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী, নিলোফার চৌধুরী, সিরাজুল হক, জামায়াতের আব্দুস সাত্তার, ইসলামী আন্দোলনের ইউনুস আহমেদ।
আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতি, মাঠে শূন্যতা
এক সময়ের জমজমাট আওয়ামী লীগ কার্যালয় এখন কার্যত নিস্তব্ধ। শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে থাকায় দলের সংগঠনিক কার্যক্রম থমকে গেছে। ফলে রাজনৈতিক মাঠে প্রাধান্য পাচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।
জেলা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনী প্রস্তুতি, সাংগঠনিক চাঙ্গাভাব ও জনসংযোগে এগিয়ে রয়েছে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি।