চট্টগ্রামে ফাঁকা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, মামলার জট অন্য আদালতে

চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল প্রায় ফাঁকা, মামলায় জর্জরিত অন্য আদালত
চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এখন মামলার চাপ নেই বললেই চলে। বর্তমানে এই ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা মাত্র ৭২টি। এর বিপরীতে চট্টগ্রামের অন্যান্য আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ, যার মধ্যে বহু চাঞ্চল্যকর মামলাও রয়েছে। এসব আলোচিত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে না পাঠানোয় হতাশ বিচারপ্রার্থীরা।
ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার চাঞ্চল্যকর মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ২০০২ সালে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। তবে বর্তমানে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে পাঠানো মামলার সংখ্যা মাত্র সাতটি। এ ছাড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে আসা মামলা রয়েছে ৬৫টি। ফলে কার্যত মামলাশূন্য হয়ে পড়েছে এই ট্রাইব্যুনাল।
অন্যদিকে, মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিভিন্ন শাখায় বিচারাধীন মামলার সংখ্যা হাজার হাজার। প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে ৪ হাজার ৬১৮টি এবং দ্বিতীয় অতিরিক্ত আদালতে ৪ হাজার ৭৯১টি মামলা বিচারাধীন। পুরো মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৪৬ হাজার ৮৯৩টি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি এস ইউ এম নুরুল ইসলাম জানান, মামলার স্বল্পতার কারণে ট্রাইব্যুনালে অলস সময় পার হচ্ছে। জেলা মনিটরিং কমিটিকে নতুন মামলা পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। জানুয়ারিতে কমিটির সভায় দুটি মামলা পাঠানোর সিদ্ধান্ত হলেও সেগুলো এখনো ট্রাইব্যুনালে পৌঁছেনি।
তবে মনিটরিং কমিটির সদস্য ও মহানগর পিপি মফিজুল হক ভূঁইয়া জানিয়েছেন, গত ছয় মাসে কমিটির কোনো সভা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে তিনি অবগত নন। পরবর্তী সভায় এ বিষয়টি তুলে ধরবেন।
ট্রাইব্যুনালে বর্তমানে বিচারাধীন মামলার মধ্যে রয়েছে মা ও দুই শিশুকে খুন, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাসিম হত্যাসহ ফটিকছড়ি ও লোহাগাড়ার কয়েকটি হত্যা মামলা। তবে বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলা যেমন চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন জব্দ, বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন অপহরণ, তালসরা দরবারে র্যাবের অর্থ লুট ও বাঁশখালীতে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা—এসব মামলার কোনো অগ্রগতি নেই।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার বলেন, “দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালকে কার্যকরভাবে কাজে লাগাতে হলে মনিটরিং কমিটিকে আরও সক্রিয় হতে হবে। দীর্ঘসূত্রতা কমাতে ট্রাইব্যুনালে আরও মামলা দ্রুত পাঠানো জরুরি।”