ভোট জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বিএনপিসহ একাধিক রাজনৈতিক দলকে বাইরে রেখে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা এবং ভোটের পরিসংখ্যানে ‘মিথ্যাচার’ করার অভিযোগে বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে সংবিধান ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে শুধু আওয়ামী লীগ ও তাদের সমর্থিত দলগুলোর অংশগ্রহণে নির্বাচন পরিচালনা করেন হাবিবুল আউয়াল। নির্বাচনে অংশ না নেওয়া বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে উপেক্ষা করে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে ভোটের পরিসংখ্যানে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

এই ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের হওয়া মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করবেন বলেও জানান ডিবি কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, “মগবাজারে আত্মগোপনে ছিলেন সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।” মামলার অন্যান্য আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করতে গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এর আগে, একই মামলায় গত ২২ জুন (রবিবার) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা থেকে আরেক সাবেক সিইসি কেএম নূরুল হুদাকে ‘মব’ তৈরি করে আটক করে জনতা। পরে তাকে উত্তরা থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং সেখান থেকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। পরদিন সোমবার (২৩ জুন) পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দায়িত্বে থাকা তৎকালীন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদের ব্যাপারেও সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ডিবি যুগ্ম-কমিশনার বলেন, “তাকেও আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে। নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।”

এর আগে ২২ জুন বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন খান রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় ‘প্রহসনের নির্বাচন’ পরিচালনার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ২৪ জনকে আসামি করা হয়, যাদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন সাবেক সিইসি: কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ (২০১৪ সালের নির্বাচন), কেএম নূরুল হুদা (২০১৮ সালের নির্বাচন), কাজী হাবিবুল আউয়াল (২০২৪ সালের নির্বাচন)।