আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় গুম, আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের

খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র, সাবেক সংসদ সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা জেলা শাখার সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি সোমবার (২৩ জুন) এ অভিযোগ দাখিল করেন।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) ট্রাইব্যুনাল অভিযোগটি আমলে নিয়েছে, বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা।
অভিযোগে যাদের নাম রয়েছে: সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, সাবেক এমপি শেখ জুয়েল, এসএম কামাল হোসেন, বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, সালাম মুর্শিদী, শেখ হেলাল, যুবলীগ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সোহেল, এমপি আক্তারুজ্জামান বাবু, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, রাশীদুজ্জামান মোড়ল, আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, যুবলীগের মহানগর সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনুর রশীদ, যুবলীগ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহাজালাল সুজন, কেএমপি কমিশনার মোজাম্মেল হক, আরসি ফুডের ইকবাল বাহার চৌধুরী, উপ-পুলিশ কমিশনার সোনালী সেন, এডিসি গোপীনাথ কানজিলাল, ডিবির নুরুজ্জামান, লবণচরা থানার সাবেক ওসি মনির, এসআই হাসান ও সুমন মণ্ডল, সোনাডাঙ্গা থানার সাবেক ওসি মমতাজ, মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাইফ, খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের কর্মকর্তা এডিডি জহিরুল ইসলাম, মুজগুন্নি এলাকার জগলুল কাদের (পিতা মৃত আব্দুল লতিফ)।
বাদী সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি জানান, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার পর তিনি খুলনায় আন্দোলন সংগঠিত করছিলেন। ৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে সড়ক ও রেল অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিতে গেলে তাকে অপহরণ করা হয়।
তিনি বলেন, “খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সামনে অজ্ঞাতনামা মুখোশধারী যুবলীগ নেতা ও পুলিশের সদস্যরা আমাদের ইজিবাইক থামিয়ে দেয়। তারা আমাকে জোর করে নামিয়ে হাত, পা, চোখ ও মুখ বেঁধে একটি গাড়িতে তুলে নেয়। আমি যাতে চিৎকার না করতে পারি, সেজন্য মুখে কাপড় ঢুকিয়ে দেয়।”
বাপ্পির দাবি, “আমাকে অন্ধকার ঘরে আটকে রেখে আন্দোলন বন্ধ করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। রাজি না হওয়ায় তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। একপর্যায়ে আমাকে খুলনার আড়ংঘাটা বাইপাস মোড়ের একটি ফাঁকা বাগানে ফেলে যায়। পরে সেখান থেকে এলাকাবাসী আমাকে উদ্ধার করে।”
অভিযোগপত্রে এসব ঘটনার বিস্তারিত বিবরণসহ আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।