রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে ড্রোন হামলা - মস্কো ও পশ্চিমা বিশ্বকে ইউক্রেনের শক্তি প্রদর্শন

ইউক্রেনের ড্রোন হামলা রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে বড় ক্ষতি, মস্কো ও পশ্চিমাকে শক্তিশালী বার্তা প্রদান।
রুশ সাইবেরিয়ার ইরকুতস্ক অঞ্চলের উসলস্কি জেলায় রাশিয়ার একটি সামরিক ইউনিটে গত রোববার ড্রোন হামলা চালানো হয়, যার ফলে ধোঁয়ার কুন্ডলী উঠতে দেখা গেছে। ইউক্রেনের এই হামলাকে দেশটির বিমানবাহিনীর বিরুদ্ধে এক দুঃসাহসী ও কৌশলগত সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে।
ইউক্রেন জানিয়েছে, এই হামলায় প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যদিও বিবিসি এই তথ্যের স্বতন্ত্র যাচাই করতে পারেনি, তবুও ‘অপারেশন স্পাইডার’স ওয়েব’ নামে চালানো অভিযানের প্রচারমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। ইউক্রেনীয়রা এই হামলাকে ২০২২ সালের কৃষ্ণসাগরে মস্কভা যুদ্ধজাহাজ ডুবানো, কার্চ সেতুতে বিস্ফোরণ এবং পরের বছরের সেভাস্তোপোল বন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সাফল্যের সাথে তুলনা করছেন।
১৮ মাস ধরে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির পর, ইউক্রেন বিশেষভাবে নির্মিত ছোট ছোট ড্রোনগুলো ট্রাকের ভেতর লুকিয়ে রাশিয়ায় পাচার করে চারটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়। ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ বলেছে, এটি তাদের সর্বকালের সবচেয়ে সফল ও পরিকল্পিত অভিযান।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলায় টিইউ-৯৫, টিইউ-২২ ও টিইউ-১৬০ ধরনের কৌশলগত বোমারু বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেগুলো আর তৈরি হয় না এবং মেরামত করাটাও কঠিন। বিশেষ করে সুপারসনিক টিইউ-১৬০-এর ক্ষতি রাশিয়ার জন্য বড় ধাক্কা।
এই অভিযান শুধু রাশিয়াকেই নয়, ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদেরও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে। কিয়েভের এক সরকারি কর্মকর্তা মার্কিনিদের কাছে হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘মার্কিনরা যুদ্ধ ইতিমধ্যেই হেরে যাওয়ার ধারণা পোষণ করছে, যা ভুল এবং সমস্যার মূল কারণ।’
সামাজিক মাধ্যমে ইউক্রেনীয় সাংবাদিকরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ইউক্রেনীয় নেতার মধ্যে উত্তেজনার কথাও উল্লেখ করেছেন, যেখানে ইউক্রেনের লড়াই এখনও অব্যাহত রয়েছে এবং তারা পরাজিত হয়নি। এই ড্রোন হামলা প্রমাণ করেছে, ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে এখনও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে এবং নতুন যুদ্ধবিরতি আলোচনার মাঝেও তারা তাদের অবস্থান শক্ত রাখছে।
রাশিয়ার দনবাস অভিযানের অগ্রগতির মাঝেও, এই হামলা মস্কো ও পশ্চিমা বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছে যে ইউক্রেন এখনো যুদ্ধের ময়দানে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের সক্ষমতা কমেছে না।