গাজায় খাবারের খোঁজে রাস্তায় ঘুরছে ক্ষুধার্ত শিশুরা

ত্রাণ সংগ্রহে এসে কান্নায় ভেঙে পড়ে এক শিশু, গাজা, ২৭ মে ২০২৫
ইসরায়েলের টানা হামলার পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় তীব্র খাদ্যসংকটে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী শিশুেরা, যারা খালি পাত্র হাতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে একটুখানি খাবারের আশায়।
আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের মানবিক পরিচালক র্যাচেল কামিংস আল জাজিরাকে বলেন, “প্রতিদিন আমি দেখি শিশুরা খালি পাত্র নিয়ে খাবারের জন্য রাস্তায় ঘুরছে। পানি খুঁজে ছুটছে ছোট ছোট পায়ে। মায়েরা তাদের সন্তানদের বাঁচাতে কীভাবে নোংরা পানি আর ঘাস মিশিয়ে খাওয়াচ্ছেন, সেই অভিজ্ঞতা শোনালে শিউরে উঠতে হয়।”
গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের খাদ্য, পানি ও জরুরি পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। এরপর ১১ সপ্তাহ কেটে গেলেও সীমিত আকারে যে ত্রাণ ঢুকছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। জাতিসংঘ বলছে, প্রতিদিন অন্তত ৫০০ ট্রাক ত্রাণ প্রয়োজন গাজায়। অথচ রোববার পর্যন্ত মাত্র ১০৭ ট্রাক প্রবেশ করেছে বলে জানায় ইসরায়েল। এর মধ্যে অনেক ট্রাক আবার লুটও হয়েছে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য দ্রুত ও পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
ইসরায়েলের আগ্রাসনে গাজার কৃষিখাতও ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘের স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ সংস্থা (ইউএনওএসএটি) ও খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, গাজার মোট ১৫ হাজার ৫৩ হেক্টর কৃষিজমির মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি—১২ হাজার ৫৩৭ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে র্যাচেল কামিংস বলেন, “গাজায় জরুরি যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন, যাতে সবচেয়ে বিপন্ন মানুষগুলোকে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়।”
এদিকে সোমবারও গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫৫ জন নিহত হয়েছেন। গাজা নগরীর ফাহমি আল-জারজাউই স্কুলে বোমা হামলায় প্রাণ গেছে ৩৬ জনের, যাদের মধ্যে ১৮ জনই শিশু। এই স্কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন অসহায় ফিলিস্তিনিরা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলমান ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৯৭৭ জন।