ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন, সংস্কার প্রক্রিয়ার গতি নিয়ে অসন্তোষ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি—ফরেন সার্ভিস একাডেমি, ঢাকা।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দল বিচার ব্যবস্থা, কাঙ্ক্ষিত সংস্কার এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য উপস্থাপন করে।
বিএনপির পক্ষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশ নেয়। তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়ার গতি নিয়ে বিএনপি সন্তুষ্ট নয়। তাঁর ভাষ্য, “এই সংস্কারের জন্য আমরাই প্রধান প্রবক্তা। কিন্তু যেভাবে প্রক্রিয়া চলছে, তাতে আমরা আশ্বস্ত হতে পারছি না।”
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের অনেক বিষয়ই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, তবে কমিশনের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, বিএনপি ইতিপূর্বে লিখিত জবাব দিয়েছিল এবং চেয়েছিল যাতে একমত হওয়া বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে জানানো হয়।
তিনি বলেন, “আমরা এখানে প্রশংসা করতে আসিনি, এসেছি বাস্তব আলোচনা করতে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া জরুরি—এ দাবি আমরা বারবার যৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করেছি। আজ দেশের ভেতরে-বাইরে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে, কেউ কেউ ষড়যন্ত্রের সুযোগ নিচ্ছে। অথচ বলা হচ্ছে, শুধু বিএনপিই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়—এই মন্তব্য আমাদের আহত করেছে।”
বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়, দেশের জনগণ উপদেষ্টামণ্ডলীর কাছ থেকে নিরপেক্ষ আচরণ প্রত্যাশা করে। তারা চায়, অবিলম্বে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক। সালাহউদ্দিন আহমদের ভাষায়, “যদি কোনো যুক্তি থাকে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার, তবে সেটা জাতির সামনে তুলে ধরুন।”
এই বৈঠকে বিএনপিসহ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং অন্যান্য দল মিলিয়ে ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। আলোচনা শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৈঠকের বক্তব্যগুলোর সারাংশ সাংবাদিকদের জানানো হয়।