ভালুকায় ভাবি ও মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা, আটক যুবক

অভিযুক্ত যুবককে আটক করেছে ভালুকা মডেল থানা
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় কাঁচি দিয়ে গলা কেটে ভাবি ও কোদাল দিয়ে কুপিয়ে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছে এক যুবক। মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের পাঁচগাঁও গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—পাঁচগাঁও গ্রামের হাফেজা আক্তার (৫২) এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আশরাফ উদ্দিন (৭৫)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।
ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত যুবক মো. সাইদুল মিয়াকে (৪০) আটক করেছে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ। সে ওই গ্রামের আফতাব উদ্দিনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পেশায় দিনমজুর সাইদুল ছোটবেলা থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন থাকলেও চিকিৎসায় এক পর্যায়ে কিছুটা সুস্থ হন। তবে সম্প্রতি সে মাদকাসক্ত হয়ে পুনরায় ‘পাগলামি’ শুরু করে। কয়েকদিন ধরে অস্বাভাবিক আচরণের মাত্রা বেড়ে গেলে পরিবারের সদস্যরা তাকে বাড়ির একটি ঘরে আটকে রাখে।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সে জানালা ভেঙে বাইরে বের হয়। এরপর কিছু সময় বাইরে ঘোরাঘুরির পর নিজের বড় ভাই শহীদ মিয়ার স্ত্রী হাফেজা আক্তারকে ঘাস কাটার কাঁচি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।
পরে বাড়ির উঠানে ধান মাপার কাজে নিয়োজিত একই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আশরাফ উদ্দিনকে কোদাল দিয়ে কোপ দেয়। গুরুতর অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আহতদের মধ্যে যারা আছেন:
১. আবদুস সামাদ (৩৫)
২. সাকিম মিয়া (৩৫)
৩. বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী শিকদার (৭৫)
৪. জেবুন নাহার (৫০) – সাইদুলের মামি
তাদের ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, “সাইদুল মাদকাসক্ত এবং প্রায়ই পাগলামি করতো। গত দুই-তিন দিন ধরে তার আচরণ আরও খারাপ হয়ে ওঠায় পরিবারের সদস্যরা তাকে ঘরে আটকে রেখেছিল। আজ সে জানালা ভেঙে বের হয়ে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আটক করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কাঁচি ও কোদাল উদ্ধার করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “সাইদুল মানসিক ভারসাম্যহীন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”