২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার নতুন এডিপি অনুমোদন

নতুন অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন, বরাদ্দ কমেছে প্রধান পাঁচ খাতে
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)। চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির তুলনায় নতুন এডিপির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা কম।
নতুন এডিপিতে স্থানীয় উৎস থেকে অর্থায়ন হবে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বিদেশি উৎস থেকে আসবে ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এতে মোট ১ হাজার ১৭১টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশনের জন্য ৮ হাজার ৫৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকার অতিরিক্ত প্রকল্প রাখা হয়েছে।
রোববার (১৮ মে) পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত এনইসি সভায় এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, আগামী বাজেট হবে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বাজেট। তিনি বলেন, “দায়িত্বজ্ঞানহীন কোনো ব্যয় থাকবে না। এমন ব্যয় করা হবে না, যা অস্থায়ীভাবে জনতুষ্টির মতো দেখাবে, কিন্তু ভবিষ্যৎ বাজেটের ওপর চাপ তৈরি করবে।”
তিনি আরও বলেন, “টাকা ছাপিয়ে ব্যয় করলে তার প্রভাব তাত্ক্ষণিক নয়, বরং ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতি বাড়ায়। সরকার এমন কোন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেবে না, যা পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করে।”
ড. মাহমুদ বলেন, আগামী বাজেটের মূল লক্ষ্য হবে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা হবে, যাতে ঋণের বোঝা সামলানো কঠিন না হয় এবং অর্থনীতি ‘ঋণের দুষ্টচক্রে’ না পড়ে।
কোন খাতে কত বরাদ্দ
নতুন এডিপিতে পাঁচটি খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মোট এডিপির প্রায় ৭০ শতাংশ। এ খাতগুলোতে আগের তুলনায় বরাদ্দ ৮ থেকে ২০ শতাংশ কমেছে।
-
পরিবহন ও যোগাযোগ: ৫৮,৯৭৩ কোটি টাকা (সর্বোচ্চ বরাদ্দ)
-
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি: ৩২,৩৯২ কোটি টাকা
-
শিক্ষা: ২৮,৫৫৭ কোটি টাকা
-
গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধা: ২২,৭৭৬ কোটি টাকা
-
স্বাস্থ্য: ১৮,১৪৮ কোটি টাকা
অন্যান্য খাতের মধ্যে:
-
স্থানীয় সরকার ও পল্লি উন্নয়ন: ১৬,৪৭২ কোটি টাকা
-
কৃষি: ১০,৭৯৫ কোটি টাকা
-
পরিবেশ, জলবায়ু ও পানিসম্পদ: ১০,৬৪১ কোটি টাকা
-
শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা: ৫,০৩৮ কোটি টাকা
-
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: ৩,৮৯৪ কোটি টাকা
এই এডিপির মাধ্যমে সরকারের লক্ষ্য অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ব্যয় কাঠামোয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং ভবিষ্যৎ অর্থনীতির জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তি গড়ে তোলা।