ইসরায়েলের ‘অপারেশন গিডিয়ন’ শুরু, আবারও ধ্বংসস্তূপে পরিণত গাজা

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) রোববার (১৮ মে) উপত্যকাটিতে স্থল হামলা শুরুর ঘোষণা দিয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আবারও ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। রবিবার (১৮ মে) ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে নিহত হয়েছেন অন্তত ১৪০ ফিলিস্তিনি। এরই মধ্যে গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে স্থল অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF)।
আল-মাওয়াসিরের একটি শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্রে চালানো বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বহু মানুষ, যাদের অনেকেই শিশু ও নারী। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে অনেকেই ঘুমন্ত অবস্থায় নিহত হন। তারা মূলত বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন ওই কেন্দ্রে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তরের সব হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে আহতরা চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, তারা “অপারেশন গিডিয়ন চ্যারট” নামক অভিযানের আওতায় উত্তর ও দক্ষিণ গাজায় স্থল অভিযান শুরু করেছে। বাহিনীটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে:
“গতকাল থেকে আমাদের স্যান্ডিং ও রিজার্ভ সেনারা গাজায় স্থল হামলা চালাচ্ছে। হামাসের বিরুদ্ধে আকাশপথে গত এক সপ্তাহে ৬৭০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।”
তারা আরও দাবি করে, হামাসের সুড়ঙ্গ, সেল এবং ট্যাংক-বিধ্বংসী স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে এবং গাজার “গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো” এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে।
ইসরায়েল দাবি করলেও বাস্তবে নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু, যাদের কোনো সশস্ত্র সম্পৃক্ততা নেই। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র গত এক সপ্তাহেই ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৫০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েল বলছে, তাদের এই হামলা অব্যাহত থাকবে এবং ‘অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের সুরক্ষায়’ এটি প্রয়োজনীয়।
গাজায় চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি আন্তর্জাতিকভাবে মানবিক বিপর্যয়ের রূপ নিচ্ছে। চিকিৎসাব্যবস্থার ভেঙে পড়া, আশ্রয়কেন্দ্রে হামলা এবং শিশু-নারী হত্যার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর হস্তক্ষেপ না হলে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।