সমবায় অর্থ কেলেঙ্কারিতে জামায়াত নেতা লাঞ্ছিত, ভিডিও ভাইরাল

জামায়াতের দুই নেতাকর্মীকে আটক করে মারধরের পর গলায় জুতার মালা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় সমবায় সমিতির অর্থ আত্মসাত ও দোকানের মালামাল সরানোর অভিযোগে জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্ট দুই নেতাকর্মীকে গণপিটুনি দিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন গ্রাহকরা। শনিবার (১৭ মে) গভীর রাতে উপজেলার বালিজুড়ি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ভুক্তভোগীরা হলেন জামালপুর শহর জামায়াতের আমির মোকাদ্দেস হোসেন এবং দলটির সমর্থক মিজানুর রহমান সুমন। রবিবার (১৮ মে) বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মাদারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন। তিনি জানান, “তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং আইনগত প্রক্রিয়ায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, আল আকাবা নামের একটি সমবায় সমিতির অধীনে পরিচালিত ‘আল ওয়ান-এ’ নামে একটি তৈরি পোশাকের দোকান থেকে মালামাল সরানোর সময় গ্রাহকরা ওই দুইজনকে হাতে-নাতে আটক করেন। সমিতির গ্রাহক রকিবুল ইসলাম আ. রহিম বলেন, “দুজনে গোপনে দোকান থেকে কয়েক লাখ টাকার মালামাল সরানোর চেষ্টা করছিলেন। পরে গ্রাহকরা তাদের মালসহ আটক করে গণপিটুনি দেন এবং জুতার মালা পরিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন।”
গ্রাহক আজাহারুল ইসলাম বলেন, “এই সমবায় সমিতির মাধ্যমে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার আমানত আত্মসাৎ করা হয়েছে। উচ্চ সুদের লোভ দেখিয়ে গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সমিতির কর্মকর্তারা এক বছর আগে থেকে গা ঢাকা দেন। এখনো কেউ টাকা ফেরত পায়নি।”
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একটি ভবনের ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকা ওই দুই ব্যক্তির গলায় জুতার মালা ঝুলানো আছে। আশপাশে উপস্থিত জনতা তাদের দিকে চিৎকার করছে এবং টাকা ফেরতের দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করছে। ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর উপজেলাজুড়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
জামায়াতে ইসলামীর জামালপুর জেলা আমির আবদুস ছাত্তার দাবি করেন, “মোকাদ্দেস হোসেন কেবল ওই দোকানের ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করেন। তাকে অন্যায়ভাবে লাঞ্ছিত করে অপমানজনক অবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।”
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুল আউয়াল বলেন, “সমিতির আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক নেই। মোকাদ্দেস হোসেন ওই দোকানে কর্মরত ছিলেন মাত্র। তাকে গণপিটুনি দিয়ে জুতার মালা পরানো একান্তই বেআইনি ও অপরাধ। আমরা এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেব।”