শান্তি আলোচনায় ‘লোকদেখানো’ প্রতিনিধি পাঠালো মস্কো: জেলেনস্কি

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে চলমান বৈঠকে এভাবে দুই পাশে অবস্থান নেন রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিরা। ছবি: সিএনএন
রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরের ১ হাজার করে যুদ্ধবন্দী মুক্তি দিতে সম্মত হয়েছে। শুক্রবার (১৬ মে) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, “আমরা বন্দি বিনিময়ের তারিখ জানি, তবে এখনই তা প্রকাশ করবো না।”
রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের প্রধান ভ্লাদিমির মেদিনস্কি রুশ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এই বন্দি বিনিময়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এ ধরনের বড় পরিসরের বন্দিবিনিময় বিরল ঘটনা। সর্বশেষ ৬ মে দুই দেশ ২০৫ জন করে বন্দী বিনিময় করেছিল।
২০২৪ সালে ইউক্রেন সব বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব দিলেও রাশিয়া তখন সাড়া দেয়নি। এখনো রাশিয়া ইউক্রেনীয় বন্দিদের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করছে না বলে জানায় কিয়েভ।
ইস্তাম্বুলের বৈঠকে ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলে ছিলেন—প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রধান আন্দ্রি ইয়েরমাক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা, এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী উমেরভ। তারা একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও-এর সঙ্গেও বৈঠক করেন।
সপ্তাহের শুরুতে মস্কো থেকে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব এলে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তা গ্রহণ করেন এবং ভ্লাদিমির পুতিনকে সরাসরি বৈঠকের আমন্ত্রণ জানান। তবে পুতিন নিজে না গিয়ে তার উপদেষ্টা মেদিনস্কিকে পাঠান।
রুশ প্রতিনিধিদলে কয়েকজন উপমন্ত্রী থাকলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভসহ শীর্ষ নেতারা ছিলেন না। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলেনস্কি বলেন, “মস্কো কেবল লোকদেখানো প্রতিনিধি পাঠিয়েছে।”
পশ্চিমা কূটনীতিকদের মতে, পুতিন এই আলোচনায় আন্তরিক নন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে আলোচনা নিয়ে আশাবাদী মন্তব্য করলেও পরে জানান, “যতক্ষণ না আমার সঙ্গে পুতিনের দেখা হচ্ছে, বড় কোনো অগ্রগতি আশা করা উচিত নয়।”
এই বৈঠকে শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প, পুতিন বা জেলেনস্কি—তিনজনের কেউই সরাসরি অংশ নেননি।
ইউক্রেন ও তার মিত্ররা ১২ মে থেকে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও রাশিয়া তা প্রত্যাখ্যান করে। রুশ পক্ষ জানায়, ২০২২ সালের আলোচনার ধারাবাহিকতায় বর্তমান সংলাপ হতে হবে এবং “যুদ্ধের মূল কারণগুলো” আলোচনায় আনাই জরুরি।