চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে বিলম্ব, বিপাকে ব্যবসায়ীরা

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জটের কারণে পণ্য খালাসে বিলম্ব, রপ্তানি ব্যাহত হয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট এবং কনটেইনারবাহী গাড়ির জটের কারণে মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকেরা। কাস্টমস কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে জেটিতে ভিড়তে না পারা জাহাজগুলো সাগরে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে দিনের পর দিন।
চীনের শেকু বন্দর থেকে ছেড়ে আসা ‘এমভি সান পেদ্রো’ নামের একটি ছোট কনটেইনার জাহাজ ১৯ মে চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমায় পৌঁছালেও ছয় দিনেও জেটিতে ভিড়তে পারেনি। জাহাজটিতে এশিয়ান গ্রুপের পোশাক কারখানার জন্য আমদানি করা কাঁচামাল রয়েছে, যা দিয়ে ইউরোপ ও আমেরিকায় রপ্তানির জন্য পোশাক তৈরির কথা। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ সালাম জানান, ‘পোশাক প্রস্তুতে সাধারণত ২০-২৫ দিনের সময় পাওয়া যায়। কিন্তু কাঁচামাল খালাসেই যদি ১০-১২ দিন লেগে যায়, তাহলে সময়মতো পণ্য রপ্তানি অসম্ভব হয়ে পড়ে।’
জাহাজটিতে মোট ২৯৮টি প্রতিষ্ঠানের আমদানিকৃত পণ্য রয়েছে, যার বড় অংশই তৈরি পোশাক খাতের কাঁচামাল। এমন আরও অন্তত ১৫টি জাহাজ সাগরে অপেক্ষমাণ অবস্থায় রয়েছে। এতে প্রায় চার হাজারের বেশি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গতরাতে কর্মবিরতি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলেও বন্দর স্বাভাবিক হতে আরও কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
সরকার ১২ মে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে ‘রাজস্ব নীতি’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করে। এর প্রতিবাদে ১৪ মে থেকে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে নামেন এবং শনিবার থেকে তাঁরা পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন করছেন। এর ফলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে, যেখান থেকে দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন হয়ে থাকে। একই সঙ্গে দেশের আমদানি-রপ্তানির প্রায় ৭৯ শতাংশ কার্যক্রম পরিচালিত হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই। ফলে এই অচলাবস্থার মারাত্মক প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়ীদের ওপর।