গাড়ির চাপ বেড়েছে, কোথাও ধীরগতি, কোথাও যানজট — ঈদের আগে বাড়ি ফেরা যাত্রায় কিছুটা ভোগান্তি

ঈদযাত্রায় যানবাহনের চাপ, কিছু এলাকায় যানজট—ভোগান্তিতে ঘরমুখো মানুষ
পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির আগে আজ বুধবার ছিল অফিসপাড়ার শেষ কর্মদিবস। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ। আজকের যাত্রাপথে বড় কোনো মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট না দেখা গেলেও, বেশ কিছু সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে এবং কোথাও কোথাও ধীরগতিতে চলছে যানবাহন। কিছু স্থানে আবার দেখা দিয়েছে যানজটও।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট ও ধীরগতি
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুমিল্লার দাউদকান্দি অংশে যানজট ছিল। সন্ধ্যায় আবার এই এলাকায় যানজট শুরু হয়। বিশেষ করে হাসানপুর এলাকায় একটি গাড়ি খাদ থেকে তোলার সময় যানজট তৈরি হয়। রাত ৯টার দিকে মেঘনা-গোমতী সেতু পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট ছড়িয়ে পড়ে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ
গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রা এলাকায় একটি মিনিট্রাকে আগুন ধরে গেলে সেখানে কিছু সময়ের জন্য যানজট হয়। তবে এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে। যানবাহনের চাপ অনেক বেশি হলেও মহাসড়কে বড় ধরনের যানজট নেই। যমুনা সেতু দিয়ে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি গাড়ি চলাচল করছে।
যমুনা সেতু সাইট অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন সেতু পার হয়েছে, যেখানে স্বাভাবিক সময়ে এই সংখ্যা ১৬ থেকে ১৮ হাজারের মতো। পুলিশ জানিয়েছে, যানবাহনের চাপ থাকলেও নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
চলন্ত ট্রাকে আগুন, সৃষ্টি হয় যানজট
বিকেল চারটার দিকে গাজীপুরের চন্দ্রা পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় ঢাকামুখী একটি মিনিট্রাকে আগুন ধরে যায়। রংপুর থেকে গরু নিয়ে আসা ট্রাকটি ফেরার পথে যানজটে আটকে পড়ে এবং ভূগর্ভস্থ গ্যাস লিকেজ থেকে ইঞ্জিনে আগুন লাগে। যাত্রী ও চালক-সহযোগীরা দ্রুত নেমে যাওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে এই আগুনে এলাকায় দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।
সাভার ও ধামরাইয়ে গাড়ির চাপ
সাভার ও ধামরাইয়ের দুটি মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। যানজট না থাকলেও সাভারের তিনটি স্থানে গাড়ি ধীরগতিতে চলছে। সার্ভিস লেনে তৈরি হচ্ছে ছোটখাটো যানজট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নিসচা (নিরাপদ সড়ক চাই)-এর সদস্যরা কাজ করছেন।
সদরঘাটে যাত্রীদের চাপ বাড়ছে
ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট থেকে দক্ষিণাঞ্চলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন অনেক যাত্রী। আজ দুপুর পর্যন্ত ৩৯টি লঞ্চ সদরঘাট থেকে ছেড়ে গেছে এবং ৪৭টি লঞ্চ টার্মিনালে ভিড়েছে। দুপুর ১২টার দিকে দেখা গেছে, পন্টুনে নোঙর করা লঞ্চগুলোর সামনে যাত্রী আহ্বান করছেন কর্মচারীরা। তুলনামূলকভাবে চাপ কম হলেও আগামীকাল বৃহস্পতিবার পোশাক কারখানাগুলো ছুটিতে গেলে যাত্রীসংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা করছে লঞ্চ মালিক সমিতি।
উপসংহার:
ঈদের আগে মানুষের গ্রামে ফেরার যাত্রায় মহাসড়কে বড় ধরনের যানজট না থাকলেও গাড়ির চাপ ও কিছু দুর্ঘটনার কারণে কিছুটা দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে। প্রশাসন সক্রিয়ভাবে কাজ করছে যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে।