১৫ দিনের অবস্থান, আশ্বাস মেলেনি—দাবিতে অনড় পল্লী বিদ্যুৎ কর্মীরা

মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক ও পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণসহ সাত দফা দাবিতে টানা ১৫ দিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মীরা। আন্দোলনের এই দীর্ঘস্থায়ী রূপ নেওয়া কর্মসূচিতে এখনো পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনো আশ্বাস না আসায় আন্দোলনকারীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এসব কর্মী। তাঁরা বলছেন, সরকারি কোনো উচ্চপর্যায়ের আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি এখনো। যদিও প্রতিনিধিদল একাধিকবার সচিবালয়ে গিয়ে আলোচনার চেষ্টা করেছে। বুধবার (৪ জুন) দিনব্যাপী প্রতিনিধিদল একটি বৈঠকে অংশ নেয় এবং সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানায়।
আন্দোলনকারীদের সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চেয়ারম্যানের পদত্যাগ, এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন, আরইবি ও পবিস একীভূতকরণ ও পুনর্গঠন, মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক, পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ, অন্যান্য বিতরণ সংস্থার মতো কাঠামোগত উন্নয়ন, চাকরিজীবীদের আর্থসামাজিক নিরাপত্তা, যুক্তিসঙ্গত ও নিয়মতান্ত্রিক পদোন্নতির ব্যবস্থা।
বুধবার দুপুরের পর শহীদ মিনার এলাকায় পুলিশের উপস্থিতি হঠাৎ করে বেড়ে যায়, যা আন্দোলনকারীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে। খুলনা থেকে আসা কর্মী আতাউর রহমান জানান, এতদিন অল্পসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকলেও বুধবার দুপুর থেকে সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, “শহীদ মিনার এলাকায় নিরাপত্তার জন্যই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর বাইরে কোনো উদ্দেশ্য নেই।”
তবে সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের নেতা তাজুল ইসলাম বলেন, “এখন পুলিশ বলছে, শহীদ মিনার ছেড়ে দিতে হবে। এমনকি বলপ্রয়োগেরও হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করছি এবং আন্দোলন চলবে।”
আন্দোলনে অংশ নেওয়া পিরোজপুরের আইয়ুব আলী বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছি, কোনো জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছি না। আমাদের ন্যায্য দাবি মানা না হলে এখান থেকে যাব না।”
তাজুল ইসলাম বলেন, “আমাদের কিছু দাবি এখনই মানা সম্ভব, কিছু দাবির জন্য সময় লাগবে – এটা আমরা বুঝি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার কোনো আন্তরিক উদ্যোগ নেই, যা আমাদের হতাশ করেছে।”