মহেশখালীতে দুই বছর ধরে বন্ধ সি-অ্যাম্বুলেন্স, স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে আদালতে তলব

দুই বছর ধরে অচল সি-অ্যাম্বুলেন্স, মহেশখালীর রোগীদের দুর্ভোগে আদালতের নজর
কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে জরুরি চিকিৎসা সেবার জন্য দেওয়া আধুনিক সি-অ্যাম্বুলেন্স দুই বছর ধরে অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এতে করে গর্ভবতী নারী, শিশু ও জরুরি রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে সি-অ্যাম্বুলেন্সটি অচল থাকার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ মাহফুজুল হককে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মহেশখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো. আসিফ।
আজ রোববার একটি স্থানীয় দৈনিকে “মহেশখালীতে সি-অ্যাম্বুলেন্স–সেবা পায় ভিআইপিরা, বঞ্চিত সাধারণ মানুষ” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়েছে, আগামী ২৯ মে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সি-অ্যাম্বুলেন্স সংক্রান্ত সাতটি প্রশ্নের লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হবে। প্রশ্নগুলো হলো:
-
সি-অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘদিন ধরে কেন অচল?
-
কবে থেকে এটি বন্ধ রয়েছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল কি না?
-
এখন পর্যন্ত কতজন রোগী এই সেবা পেয়েছেন এবং পরিবহনটি কারা পরিচালনা করেছেন?
-
রক্ষণাবেক্ষণে কত টাকা ব্যয় হয়েছে?
-
পরিবহনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট নীতিমালা বা ফি আছে কি না?
-
সি-অ্যাম্বুলেন্সের জন্য মোট কত টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে এবং তা কীভাবে ব্যয় হয়েছে?
-
চালকের নিয়োগ ও বেতন সংক্রান্ত তথ্য কী?
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, তিন লাখ ৮৫ হাজার জনসংখ্যার দ্বীপ মহেশখালীতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও চিকিৎসা সুবিধার অভাবে রোগীদের প্রায়ই কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠাতে হয়। অথচ বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পাওয়া আধুনিক সি-অ্যাম্বুলেন্সটি ঘাটে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে, যা তদন্তযোগ্য বিষয়।
আদালত আরও উল্লেখ করেন, মহেশখালী একটি নদীবেষ্টিত বিচ্ছিন্ন দ্বীপ, যার স্থলপথে কোনো সরাসরি সংযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে সি-অ্যাম্বুলেন্সই হতে পারত সবচেয়ে কার্যকর বাহন। কিন্তু এটি ব্যবহার না করে ফেলে রাখা হয়েছে, যা প্রশাসনিক দায়িত্বহীনতার ইঙ্গিত দেয়।
আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আশেক ইলাহী শাহজাহান নুরী। তিনি বলেন, আদেশটি দ্রুত স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহফুজুল হক জানান, সি-অ্যাম্বুলেন্সটির ইঞ্জিন ক্ষমতা ৪০০ হর্সপাওয়ার। মহেশখালী থেকে কক্সবাজার যেতে একবারে ৪৫ লিটার ডিজেল লাগে। এটি ২০২৩ সালের মে মাসে বরাদ্দ পাওয়া যায়। সে বছর ১৮৫ জন এবং ২০২৪ সালে ১৭৯ জন রোগীকে পরিবহন করা হয়েছিল। তবে গত বছরের জুলাই থেকে এটি বন্ধ রয়েছে।