মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্ব অনিশ্চয়তায়, প্রশাসন-সেনাবাহিনীর দ্বন্দ্ব স্পষ্ট

ক্ষমতার দ্বন্দ্বে টালমাটাল অন্তর্বর্তী সরকার – অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্ব নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ২০ মে অনুষ্ঠিত একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর থেকেই সরকারের ভেতরকার দ্বন্দ্ব নিয়ে আলোচনা তীব্র হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল–জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউনূসের প্রশাসন ও দেশের তিন বাহিনীর মধ্যে ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’-এর আবহ তৈরি হয়েছে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সম্প্রতি এক বক্তৃতায় স্পষ্টভাবে বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হওয়া উচিত। তিনি হুঁশিয়ার করে দেন, সেনাবাহিনীকে দীর্ঘ সময় বেসামরিক দায়িত্বে রাখা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে।
অন্যদিকে অন্তর্বর্তী প্রশাসনের অবস্থান, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নির্বাচন আয়োজনের আগে রাজনৈতিক সংস্কারের সময় প্রয়োজন। সেনাপ্রধান এই বিলম্বিত নির্বাচনের বিরোধিতা করছেন এবং সরকারপ্রস্তাবিত রাখাইন করিডর, স্টারলিংক সেবা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, এসব জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত কেবল নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই গ্রহণযোগ্য।
ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন ছড়ালেও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শনিবার জানান, ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না, তিনি আমাদের সঙ্গেই আছেন।’ তবে দেশজুড়ে চলমান উত্তেজনা ও রাজনৈতিক দলগুলোর চাপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
বিএনপি এবং সদ্য গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন দল একদিকে নির্বাচন ত্বরান্বিত করার দাবি জানাচ্ছে, অন্যদিকে সাবেক শাসকদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রশাসনের মধ্যে দ্বন্দ্ব, এবং সেনাবাহিনীর স্পষ্ট বার্তা—এই সব মিলিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্ব এখন এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি।