এনবিআর ভাঙনের অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আবারও অবস্থান কর্মসূচিতে যাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে দুটি বিভাগ করার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আবারও অবস্থান কর্মসূচি ডেকেছে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’। মঙ্গলবার রাতে সংগঠনের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামীকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে রাজস্ব ভবনের নিচতলায় এবং ঢাকার বাইরে সব দপ্তরে এই অবস্থান কর্মসূচি শুরু হবে। দুপুর ১২টায় রাজস্ব ভবন প্রাঙ্গণে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।
সংগঠনটি জানায়, এনবিআর ভেঙে ‘রাজস্ব নীতি’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ নামে দুটি বিভাগ করার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং উপদেষ্টা পরিষদের প্রতিনিধিরা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় আন্দোলনে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
এর আগে মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আন্দোলনকারীদের একটি বৈঠক হয়। এতে সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেন। তবে বৈঠক শেষে তারা অভিযোগ করেন, আলোচনায় তাদের বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়নি, বরং ‘ডেকে নিয়ে অপমান’ করা হয়েছে।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা বলেছি, আন্দোলন থেকে সরে আসেন। তারা কী বলেছে, সেটায় আমার যায় আসে না।”
তিনি আরও বলেন, এনবিআর পৃথকীকরণের বিষয়টি বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে। গেজেট জারির পরই আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হবে এবং দাবিগুলো যথাসম্ভব অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে জারি হওয়া অধ্যাদেশের মাধ্যমে এনবিআরকে দুটি বিভাগে ভাগ করে ‘জাতীয় রাজস্ব নীতি বিভাগ’ এবং ‘জাতীয় রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ গঠন করা হয়। এতে বলা হয়, সময়মতো গেজেট প্রকাশ করে এটি কার্যকর করবে সরকার।
অধ্যাদেশটি জারির পর থেকেই এনবিআরের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়। আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে দেশব্যাপী কলম বিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, এনবিআরকে ভেঙে ফেলা হলে সংস্থাটির কাঠামো, প্রশাসন ও নীতিগত স্বাধীনতা বিঘ্নিত হবে এবং রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
সরকারের পক্ষ থেকে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, নতুন গঠিত দুই বিভাগের জনবল ও কাঠামো নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদেরই দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি, এতে এনবিআরের ক্যাডার কর্মকর্তাদের সুনির্দিষ্ট ভূমিকা ও অধিকার খর্ব হচ্ছে।