বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির জাতীয় সম্মেলনে মেহনতি মানুষের অধিকারের দাবি

বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির একাদশ জাতীয় সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন সংগঠনের নেতারা।
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে গরিব মেহনতি মানুষের, কিন্তু তাঁদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন আজও হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির একাদশ জাতীয় সম্মেলন থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে—আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হলে আবার মানুষ রাস্তায় নামবে।
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই সম্মেলন। উদ্বোধন করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও প্রবীণ নেতা মৃন্ময় মণ্ডল। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও মৃন্ময় মণ্ডল, আর দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন বর্তমান সভাপতি ডা. ফজলুর রহমান।
আলোচনায় অংশ নেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, শিক্ষকনেতা নূর মোহাম্মদ তালুকদার, কৃষক নেতা এস এম সবুর, বজলুর রশীদ ফিরোজ, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, সোহেল আহম্মেদ ও অর্ণব সরকার। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা।
বক্তারা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পরও ধনী-গরিবের বৈষম্য আরও বেড়েছে। গ্রামীণ মজুররা কাজ পান না, পেলেও মজুরি অপ্রতুল। একজন খেতমজুরের আয় দিয়ে পরিবারে ঠিকমতো খাবার জোটে না, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা তো আরও দূরের কথা। ফলে দরিদ্র পরিবারগুলো দারিদ্র্যচক্রেই বন্দী থাকে। এই বাস্তবতা বদলাতে হবে।
নেতারা খাসজমি দখলমুক্ত করে ভূমিহীনদের বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি রেশনিং চালু করে দুর্নীতিমুক্তভাবে তা বিতরণের দাবি তোলেন।
সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস সাহেব শেখ হাসিনা সরকারের অন্যায় নিরসনের সুযোগ পেয়েও তা করেননি। তিনি সরকারের কাছে আগামী সাত দিনের মধ্যে পদক্ষেপ প্রত্যাশা করেন। একই সঙ্গে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
সম্মেলন শেষে একটি মিছিল বের হয়, যা জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে পল্টন ও বায়তুল মোকাররম এলাকা ঘুরে আবার প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।
নতুন কমিটি গঠন
সম্মেলনে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। সভাপতি হন ডা. ফজলুর রহমান, কার্যকরী সভাপতি আনোয়ার হোসেন রেজা, সাধারণ সম্পাদক অর্ণব সরকার ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক কল্লোল বণিক। সহসভাপতি নির্বাচিত হন জয়নাল আবেদীন খান, পরেশ কর, আশরাফুল আলম, রফিকুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, সাহা সন্তোষ ও হারুন আল বারী। ৯ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটিতে থাকছেন: ডা. ফজলুর রহমান, আনোয়ার হোসেন রেজা, অর্ণব সরকার, কল্লোল বণিক, সোহেল আহম্মেদ, পরেশ কর, রমেন্দ্র চন্দ্র বর্মণ, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন ও মোতালেব হোসেন।