বিএনপি নেতার ছেলের বিরুদ্ধে মারধর ও ছুরিকাঘাতের অভিযোগ

বগুড়ার ধুনটে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় স্থানীয় এক বিএনপি নেতার ছেলের ছুরিকাঘাত ও মারধরে আহত হয়েছেন ওই ছাত্রীর বাবা ও মা।
শুক্রবার (১৬ মে) বিকেল ৩টার পর উপজেলার সদর ইউনিয়নের উল্লাপাড়া গ্রামে কৃষক জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে ঢুকে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন—উল্লাপাড়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) ও তার স্ত্রী আর্জিনা খাতুন (৪০)। তাদের প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে আর্জিনা খাতুনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ধুনট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি, তবে মামলা হলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধুনট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনছুর আহম্মেদ পাশার ছেলে নাফিজ ফয়সাল আকাশ মাস্টার্স পাস করে বর্তমানে বেকার। তিনি দীর্ঘদিন ধরে একই গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। বিষয়টি নিয়ে পূর্বে একাধিকবার উভয় পরিবারের মধ্যে সমঝোতা বৈঠকও হয়েছিল।
হামলার দিন বিকেলে আকাশ তার কয়েকজন সহযোগীসহ জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে যান এবং মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। পরিবারের পক্ষ থেকে মা আর্জিনা খাতুন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে আকাশ ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন, ফলে তিনি রক্তাক্ত জখম হন। তার চিৎকার শুনে স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ছুটে এলে তাকেও পিটিয়ে আহত করা হয়।
প্রতিবেশীরা এসে আহত অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত আকাশ এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান।
এ বিষয়ে অভিযুক্তের বাবা, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনছুর আহম্মেদ পাশা সাংবাদিকদের বলেন, তার ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তিনি দাবি করেন, মেয়ের পরিবার তার ছেলেকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে মারধর করেছে এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আকাশ পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় হামলা চালিয়েছে।
ধুনট থানার এসআই শামীম হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আহতদের চাকু দিয়ে নয়, বরং লাঠি বা বাটাম দিয়ে মারধর করা হয়েছে।