ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে সংস্কার মূল্যায়নের দাবি

ইমাম-খতিব-উলামা পরিষদ
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত প্রতিবেদনে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি—এমন অভিযোগ তুলেছে রামপুরা ও হাতিরঝিল থানা ইমাম-খতিব-উলামা পরিষদ। তারা এই প্রতিবেদনকে “কোরআনবিরোধী” আখ্যা দিয়ে প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো বাতিলসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর রামপুরায় অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়। মানববন্ধনের আয়োজন করে কোরআনপ্রেমী তাওহীদি জনতা ও স্থানীয় ইমাম-খতিবদের সমন্বয়ে গঠিত উলামা পরিষদ।
ছয় দফা দাবিতে যা ছিল:
১. প্রতিবেদনের কোরআনবিরোধী সুপারিশ বাতিল করা।
২. শীর্ষ মুফতিদের মাধ্যমে কমিশনের সুপারিশ যাচাই-বাছাই।
৩. নারীর জানমাল, সম্মান ও সম্ভ্রমের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
৪. যৌনকর্মী, ছিন্নমূল ও এতিম কন্যাসন্তানের সম্মানজনক পুনর্বাসন এবং বিধবা-বয়স্ক নারীদের আর্থিক সহায়তা।
৫. গুম-খুন, ধর্ষণ, শিশু নির্যাতনের প্রতিকারে শরিয়াভিত্তিক বিচার চালু।
৬. যৌতুক ও যৌন হয়রানির অপরাধে কঠোর শাস্তির বাস্তবায়ন।
মানববন্ধনে বক্তাদের বক্তব্য:
নূর মসজিদের খতিব মাওলানা খুরশীদ আলম কাসেমী লিখিত বক্তব্যে বলেন, “সংস্কারের নামে ধর্ম ও সামাজিক মূল্যবোধকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। এ ধরনের আইন মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত হানে।”
রামপুরা নূর মসজিদের ইমাম মাওলানা এনায়েত কবির বলেন, “কমিশনের প্রতিবেদনে ইসলামি শরিয়ত অনুসারে নারীর সম্পত্তির ভাগদানের ব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করার দাবি উঠেছে, যা কোরআনবিরোধী। অথচ বাস্তবে নারীরা যতটুকু পাওয়ার অধিকার রাখে, তা দিতেই রাষ্ট্র ব্যর্থ।”
তিনি আরও বলেন, “যৌনপেশাকে শ্রমের মর্যাদা দিতে বলা হয়েছে, কিন্তু এসব নারীর জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। শুধু ইসলাম নয়, কোনো ধর্মই এই পেশাকে স্বীকৃতি দেয় না।”
ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক এফ এম এ হায়দার বলেন, “স্বৈরাচারী সরকারের পতনের জন্য মানুষ রক্ত দিয়েছে, ধর্মবিরোধী আইন প্রণয়নের জন্য নয়।”