২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার হলফনামায় অসত্য তথ্য: দুদক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামায় অসত্য ও অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নজরে আনার জন্য কমিশনকে চিঠি দিয়েছে দুদক।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
তিনি জানান, ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার সম্পদ বিবরণী দুদকে দাখিল করা হয়। বর্তমান কমিশন তা পুনঃযাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। যাচাইয়ের সময় তাঁর আয়কর নথি, নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা এবং অন্যান্য উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য মিলিয়ে দেখা হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা হলফনামায় নিজ নামে থাকা জমির পরিমাণ ৬ দশমিক ৫০ একর বলে উল্লেখ করেন এবং ক্রয়মূল্য দেখান ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয় ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৯৯ হাজার ৯০৪ টাকা।
তবে যাচাইয়ে দেখা যায়, ওই সময় শেখ হাসিনার নামে ২৮ একর ৪১ শতকের বেশি জমি ছিল, যার প্রকৃত মূল্য ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ১০ টাকা। এ ছাড়া অস্থাবর সম্পদের প্রকৃত পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ১৮ লাখ ১০ হাজার ১৫৪ টাকা। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনা প্রায় ২২ একর জমির তথ্য গোপন করেছেন এবং ৩১ লাখ ৯১ হাজার ১০ টাকার স্থাবর সম্পদের তথ্য দেননি।
দুদক চেয়ারম্যান আরও জানান, শেখ হাসিনা তাঁর ব্যবহৃত একটি গাড়ির তথ্য হলফনামায় অন্তর্ভুক্ত করেননি। গাড়িটির মূল্য ছিল ২ লাখ ৩০ হাজার ইউরো, যা সে সময়কার বিনিময় হার অনুযায়ী ১ কোটি ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, “হলফনামায় দেওয়া তথ্য ও বাস্তবতার মধ্যে গুরুতর অসঙ্গতি রয়েছে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছি। নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী ইসি এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। একই সঙ্গে, এই ঘটনায় দুদকের এখতিয়ারভুক্ত অংশে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দুদক চেয়ারম্যান জানান, বিষয়টি দুটি ভাগে বিবেচিত হচ্ছে—একটি অংশ নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন, অন্যটি দুদকের। উভয় সংস্থা তাদের নিজ নিজ এখতিয়ার অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।