রাবির সাবেক উপ-উপাচার্যসহ ১৪৮ জনের নামে বিস্ফোরক আইনে মামলা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক উপ-উপাচার্য এবং বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহাসহ ১৪৮ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একইসঙ্গে আরও ৬০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলাটি দায়ের করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী মো. সিজান (৩২)। তিনি রাজশাহী মহানগরীর শাহমখুদম থানার পবাপাড়া এলাকার সুলতান সরদারের ছেলে। বোয়ালিয়া মডেল থানায় দায়ের করা এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকায় মামলা দায়েরে বিলম্ব হয়েছে।
থানা সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিক তদন্ত শেষে গত ১২ মে মামলাটি রেকর্ড করা হয়। বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে, আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
হামলার বর্ণনা:
ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ৫ আগস্ট, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মী সিজানের নেতৃত্বে সাত শতাধিক মানুষ রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন মোড় থেকে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী মিছিল শুরু করে। মিছিলটি খরবোনা সাঁকো এলাকায় পৌঁছালে হামলার শিকার হয়।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরমান আলীর কার্যালয়ের সামনে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা আসামিরা মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। অভিযোগে বলা হয়, হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা দিয়ে মিছিলকারীদের ‘জীবিত না রাখার’ নির্দেশ দেওয়া হয় এবং ৩ থেকে ৩৯ নম্বর আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে গুলি চালায়।
বাদী সিজান বলেন, “আমার ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়। দুই পায়ের হাঁটুর নিচে ও বাম কনুইয়ে আঘাত পাই। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়, এবং আমার শরীরে ২২টি সেলাই পড়ে।”
এজাহারে আরও বলা হয়, ৪০ থেকে ১৪৮ নম্বর আসামি এবং অন্যান্য অজ্ঞাত হামলাকারীরা হাতে তৈরি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এবং ধারালো অস্ত্র, চাইনিজ কুড়াল, জিআই পাইপ, লাঠিসোঁটা দিয়ে মিছিলে হামলা চালায়।
অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যারা রয়েছেন:
এই মামলায় রাজশাহীর গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন:
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া এবং আরও অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী।
প্রতিক্রিয়া:
অভিযুক্ত প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না এবং মামলার বিষয়েও কিছু জানি না। সম্ভবত কোনো ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে আমার নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”