তথ্য গোপনের অভিযোগে নিয়োগ বাতিল, পরে পুনর্বহাল – চট্টগ্রামে স্বাস্থ্য সহকারী নিয়ে বিতর্ক

তথ্য গোপনের অভিযোগে বরখাস্ত, এক বছর পর পুনরায় নিয়োগ।
চট্টগ্রামে তথ্য গোপনের অভিযোগে নিয়োগ বাতিল হওয়া এক স্বাস্থ্য সহকারীকে পুনরায় নিয়োগ দিয়েছেন বর্তমান সিভিল সার্জন, যা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক।
২০২৩ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ওয়ার্ড স্বাস্থ্য সহকারী পদে আবেদন করেন কাউছার সোলতানা। ২০২৪ সালের ২৩ মে তাঁকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয় এবং ২৮ মে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি যোগ দেন। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে তাঁর ঠিকানা ছিল কাঞ্চনা ইউনিয়নের, অথচ তিনি আবেদনে সাতকানিয়া ইউনিয়নের ঠিকানা ব্যবহার করেন, যেখানে পদটি খালি ছিল। এই তথ্য গোপনের অভিযোগে ৩ জুন তাঁর নিয়োগ বাতিল করা হয়।
পূর্ববর্তী সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীর স্বাক্ষরে নিয়োগ বাতিলের আদেশ জারি করা হয়। তিনি জানান, “স্বাস্থ্য সহকারীর নিয়োগে প্রার্থীর ঐ ইউনিয়নের বাসিন্দা হওয়া বাধ্যতামূলক। এ কারণে তাঁর নিয়োগ বাতিল করা হয়েছিল।”
এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন কাউছার সোলতানা। মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ২০২৫ সালের ২৪ মার্চ বর্তমান সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম এক অফিস আদেশে তাঁর নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পুনরায় নিয়োগ দেন। ২৭ মার্চ তিনি আবার সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেন।
তবে এই সিদ্ধান্তকে বিধিবহির্ভূত বলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের উপপরিচালক (আইন) পরিমল কুমার পাল বলেন, “তথ্য গোপন গুরুতর অপরাধ। আগের নিয়োগ বাতিল বিধিসম্মত ছিল। নতুন করে পুনর্বহালের সিদ্ধান্তটি আমাদের জানামতে বিধিসম্মত হয়নি।”
জানা গেছে, নিয়োগ কমিটির চার সদস্যের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই একক সিদ্ধান্তে পুনঃনিয়োগের আদেশ দেওয়া হয়। যদিও সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেছেন, “তদন্ত কমিটি, ইউএইচএফপিও ও আইনজীবীদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ১৫ এপ্রিল পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত ছিল যথাযথ এবং কোনো রকম ব্যত্যয় না ঘটিয়ে তা অনুসরণ করাই উচিত ছিল।
এই ঘটনায় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া, তথ্য যাচাই ও বিধির যথাযথ প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কী পদক্ষেপ নেয় এবং হাইকোর্টের চূড়ান্ত রায় কী হয়।