ডিসেম্বরে মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত - সেনাপ্রধান

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত—সেনাবাহিনী থাকবে নিরপেক্ষ ও জাতীয় স্বার্থে অটল।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান মনে করেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। আজ বুধবার ঢাকা সেনানিবাসের সেনা প্রাঙ্গণে অফিসার্স অ্যাড্রেসে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তার অবস্থান আগের মতোই রয়েছে। তার ভাষায়, দেশের ভবিষ্যৎ পথ নির্ধারণের অধিকার কেবল একটি নির্বাচিত সরকারেরই রয়েছে।
অনুষ্ঠানে ঢাকায় অবস্থানরত সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা সরাসরি ও ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন। সেখানে নির্বাচন ছাড়াও করিডর, বন্দর, সংস্কারসহ নানা সমসাময়িক বিষয় উঠে আসে। উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
করিডর নিয়ে মন্তব্য
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর স্থাপন নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে একটি নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমেই। এটি হতে হবে বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এবং অবশ্যই জাতীয় স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে। তিনি বলেন, "যা-ই করা হোক না কেন, তা রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে হতে হবে।"
‘মব ভায়োলেন্স’ নিয়ে কঠোর বার্তা
উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলা বা সহিংসতা (মব ভায়োলেন্স) সম্পর্কে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, এখন থেকে সেনাবাহিনী এই বিষয়ে আরও কঠোর অবস্থানে যাবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এমন কার্যকলাপ সহ্য করা হবে না বলে তিনি জানান।
বন্দর ইস্যুতে মত
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশিদের হাতে দেওয়ার বিষয়ে চলমান বিতর্ক নিয়েও কথা বলেন সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় জনগণ ও রাজনৈতিক নেতাদের মতামত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক সরকারের মাধ্যমেই গ্রহণ করা উচিত।
সংস্কার প্রসঙ্গে
সংস্কার বিষয়ক আলোচনায় তিনি বলেন, কী ধরনের সংস্কার হচ্ছে বা কীভাবে হচ্ছে—তা সম্পর্কে তার জানা নেই। কেউ তার সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেনি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ঈদ ও নির্বাচন নিয়ে বার্তা
আসন্ন ঈদুল আজহা যেন উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে উদ্যাপন করা যায়, সেজন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন সেনাপ্রধান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনোই এমন কোনো কাজে যুক্ত হবে না, যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
সবশেষে তিনি সেনাসদস্যদের নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে যেকোনো নির্বাচনী দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে হবে। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও আশ্বাস দেন।