মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, বৈশাখ ৩০ ১৪৩২, ১৫ জ্বিলকদ ১৪৪৬

ব্রেকিং

শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

ইসলাম

একটি কুফরী বাক্য

 প্রকাশিত: ১৪:২০, ১ নভেম্বর ২০২২

একটি কুফরী বাক্য

আল্লাহ আমার সন্তান ছাড়া আর কাউকে দেখল না!

মা-বাবার জন্য সন্তানের বিয়োগ-বেদনা অসহনীয়। ফলে সন্তানের মৃত্যুতে কোনো কোনো মা-বাবার মুখ থেকে এমন কথা বের হয়ে যায়, যা কুফরী কথা। যেমন সন্তানের মৃত্যুতে কোনো কোনো মা-বাবাকে বলতে শোনা যায়- “আল্লাহ আমার সন্তান ছাড়া আর কাউকে দেখল না।”

মুমিন এমন কথা বলতে পারে না। দ্বীনী জ্ঞান, সহীহ দ্বীনী বুঝ ও ভারসাম্যের অভাবেই মানুষ এমন কথা বলে ফেলে। এটি একটি কুফরী বাক্য, যা আল্লাহর ফয়সালার উপর আপত্তি ও অভিযোগের বাক্য।

সন্তান আল্লাহর দান। তিনি যাকে ইচ্ছা, সন্তান দান করেন। যাকে ইচ্ছা, দান করেন না। তেমনি সন্তান দেওয়ার পর সন্তানকে জীবিত রাখা বা নিয়ে যাওয়াও আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আর এ সন্তান তো আল্লাহই অনুগ্রহ করে দান করেছিলেন, তিনিই আবার নিয়ে গেছেন। তাছাড়া এতে অনেক হেকমতও নিহিত থাকে, যা আমাদের জানা নেই। সুতরাং আল্লাহর ফয়সালা মেনে নেওয়া ও সবর করাই মুমিনের শান ও নবীজীর শিক্ষা। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো এক কন্যা খবর পাঠালেন- তার এক সন্তান মৃতপ্রায় অবস্থা। তখন নবীজী খবরদাতাকে বললেন, তুমি গিয়ে তাকে বল-

إِنّ لِلهِ مَا أَخَذَ وَلَهُ مَا أَعْطَى، وَكُلّ شَيْءٍ عِنْدَهُ بِأَجَلٍ مُسَمّى، فَمُرْهَا فَلْتَصْبِرْ وَلْتَحْتَسِبْ.

আল্লাহ যাকে নিয়ে যান সেও আল্লাহর, যাকে রাখেন সেও তাঁর। আর সবকিছুর জন্যই তাঁর কাছে রয়েছে নির্দিষ্ট সময়সীমা। সুতরাং তুমি তাকে ধৈর্য ধারণ করতে বল এবং সওয়াবের আশা করতে বল।

পরে নবীজী তাকে দেখতে গেলেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯২৩

কারো মৃত্যুতে মাতম করা, জামা-কাপড় ছেঁড়া, গাল চাপড়ানো, জাহেলী কথাবার্তা বলা- হাদীস শরীফে এগুলোর ব্যাপারে ধমকি এসেছে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

لَيْسَ مِنّا مَنْ لَطَمَ الخُدُودَ، وَشَقّ الجُيُوبَ، وَدَعَا بِدَعْوَى الجَاهِلِيّةِ.

যে (কারো মৃত্যুশোকে বিলাপ করে) গাল চাপড়ায়, জামা ছেঁড়ে এবং জাহেলী যুগের মত বিভিন্ন (অন্যায়) কথা বলে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১২৯৪

তাহলে কি সন্তান বা কারো বিয়োগ-বেদনায় কাঁদাও যাবে না? হাঁ, কাঁদা যাবে, তবে বিলাপ করা এবং জাহেলী কথাবার্তা বলা যাবে না। নিজ সন্তানের বিয়োগ-বেদনায় নবীজীও কেঁদেছেন, কিন্তু সাথে সাথে সতর্কও করে দিয়েছেন- এ অবস্থায়ও আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কথা বলা যাবে না। নবীজীর সন্তান ইবরাহীম রা.-এর মৃত্যুর সময় নবীজী কাঁদছিলেন। এ দেখে আবদুর রহমান ইবনে আউফ রা. বললেন, আপনিও কাঁদছেন আল্লাহর রাসূল! (তিনি ধারণা করেছিলেন, এ সাধারণ কান্নাও নিষিদ্ধ বিলাপের অন্তর্ভুক্ত।)। তখন নবীজী বললেন, (এটি বিলাপ নয়) এ তো মানুষের মনের দয়া-মায়া(-এর স্বাভাবিক প্রকাশ ও কষ্টের অশ্রæ। এতে সমস্যা নেই)। তারপর বললেন-

إِنّ العَيْنَ تَدْمَعُ، وَالقَلْبَ يَحْزَنُ، وَلاَ نَقُولُ إِلّا مَا يَرْضَى رَبّنَا، وَإِنّا بِفِرَاقِكَ يَا إِبْرَاهِيمُ لَمَحْزُونُونَ.

চোখ অশ্রæসজল, হৃদয় ব্যথিত। কিন্তু আমাদের রব অসন্তুষ্ট হন- আমরা এমন কথা বলব না। হে ইবরাহীম! তোমার বিয়োগে আমরা বড়ই ব্যথিত। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৩০৩

সুতরাং কারো মৃত্যুতেই আমরা বিলাপ করব না এবং আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কথা বলব না।  বরং ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন বলব এবং সবর করব, যার বিনিময়ে আল্লাহ জান্নাত দিবেন। হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা বলেন-

مَا لِعَبْدِي المُؤْمِنِ عِنْدِي جَزَاءٌ، إِذَا قَبَضْتُ صَفِيّهُ مِنْ أَهْلِ الدّنْيَا ثُمّ احْتَسَبَهُ، إِلّا الجَنّةُ.

যখন আমি আমার মুমিন বান্দার প্রিয়জনকে উঠিয়ে নিই আর সে (ছবর করে এবং) সওয়াবের আশা রাখে; কেবল জান্নাতই হতে পারে এর প্রতিদান। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪২৪