ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির পর আলোচনায় ফিরল সিন্ধু পানিচুক্তি

যুদ্ধবিরতির পর আলোচনায় ফিরছে ভারত–পাকিস্তান; সিন্ধু পানিচুক্তি সচল করতে পাকিস্তানের চাপ
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পর দুই দেশের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোয় মানুষ ফিরছে নিজ ঘরে, খুলছে দোকানপাট। তবে যুদ্ধবিরতি হলেও ‘সিন্ধু পানিচুক্তি’ স্থগিত রেখেছে ভারত, যা নিয়ে আবারও আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দিয়েছে পাকিস্তান।
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হলে, ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলায় মদদ দেওয়ার অভিযোগ তোলে এবং ১৯৬০ সালের ‘সিন্ধু পানিচুক্তি’ প্রথমবারের মতো স্থগিত করে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচনা সৃষ্টি করে।
যদিও ১১ মে থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে, ভারত এখনো চুক্তি সচল করেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এ নিয়ে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানান, তাঁরা ভারতের সঙ্গে পানিচুক্তি, কাশ্মীর সংকট ও নিরাপত্তা ইস্যুতে আলোচনা করবেন, তবে নির্দিষ্ট সময় জানানো হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের উচিত এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়া। সাবেক কর্মকর্তা জাওয়াইদ লতিফ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারতকে চুক্তি সচল রাখতে বাধ্য করা সম্ভব।
পাকিস্তানে সিন্ধু নদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ কৃষিজমিতে পানি সরবরাহ করে। ৫ মে ডন পত্রিকা জানায়, ভারত চেনাব নদীর পানি বন্ধ করলে পাকিস্তানে পানি সংকট দেখা দেয়। যদিও ৬ মে থেকে আবার পানি সরবরাহ শুরু হয়।
যুদ্ধবিরতির ফলে জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে মানুষ ঘরে ফিরছেন, দোকানপাট খুলছে। শ্রীনগরে একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমি খুশি, কিন্তু এখনো ভয় কাটেনি। বিস্ফোরণের শব্দ শুনলে মনে হয় যুদ্ধ আবার শুরু হবে।’
এদিকে পাকিস্তানে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে এবং বাজারে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। করাচির বাসিন্দা আহমেদ ইয়ার বলেন, ‘আমাদের সাধারণ জীবনে ফিরতে হবে এবং দেশের সমস্যাগুলো সমাধানে মনোযোগ দিতে হবে।’
যুদ্ধবিরতির প্রশংসা করেছে জাতিসংঘ, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, তুরস্ক, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ। পোপ লিও চতুর্দশও শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন।
এই প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, কাশ্মীর সংকট সমাধানে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, “দেখা যাক, হাজার বছর পরেও কি এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।”
তবে বিশ্লেষকদের মতে, ভারত বরাবরই তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে আপত্তি জানিয়ে এসেছে। তাই ট্রাম্পের প্রস্তাব দিল্লিতে ভালোভাবে গ্রহণ নাও করা হতে পারে।