সোমবার ১২ মে ২০২৫, বৈশাখ ২৯ ১৪৩২, ১৪ জ্বিলকদ ১৪৪৬

ব্রেকিং

শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

রাজনীতি

আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের রাজনৈতিক বিচারের আহ্বান বাসদের

 প্রকাশিত: ২১:৩৩, ১১ মে ২০২৫

আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের রাজনৈতিক বিচারের আহ্বান বাসদের

সন্ত্রাস দমন আইনের আওতায় নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়ে এর বিরোধিতা করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ। দলটির দাবি, বিচার প্রক্রিয়া যথাযথ আইনি কাঠামোর মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হওয়া উচিত এবং এই প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী—উভয় রাজনৈতিক দলের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

রবিবার (১১ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রকারান্তরে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের প্রতিই মানুষের সহানুভূতি সৃষ্টি করবে।” তিনি অভিযোগ করেন, বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার না করে এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিবর্তে ঢালাও মামলা দিয়ে মামলাগুলোকে প্রহসনে পরিণত করার চক্রান্ত চলছে।

বিবৃতিতে বজলুর রশীদ ফিরোজ দাবি করেন, “জুলাই গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে।” তার মতে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন গত ১৫ বছরের শাসনামলে আওয়ামী লীগ দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে, বহু মানুষ গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, এবং এসব ঘটনার জন্য দলটি দায়ী।

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জুলাই গণহত্যাসহ অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য ন্যূনতম অনুশোচনাও প্রকাশ করা হয়নি। তবুও অগণতান্ত্রিক আইন—যেমন সন্ত্রাস দমন আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইন—ব্যবহার করে নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা বা কার্যক্রম স্থগিত করাকে গণতান্ত্রিক উত্তরণে বাধা হিসেবে দেখা উচিত।”

বজলুর রশীদ ফিরোজ মনে করেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন সংশোধন করে জুলাই গণহত্যাসহ সব রাজনৈতিক ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার করাই হবে সঠিক গণতান্ত্রিক পথ।

তিনি বলেন, “গত ৫৪ বছর ধরে এদেশের মানুষ একাত্তরের গণহত্যার দায়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার দাবি করে আসছে। কিন্তু কোনো সরকারই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারও এই দাবিকে উপেক্ষা করে জামায়াতের যুদ্ধাপরাধ ইস্যুকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছে।”

বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে নির্বাহী আদেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জনগণের মনোযোগ ভিন্ন দিকে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তা সফল হয়নি।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিও একই ধরনের মনোভাব পোষণ করে তিনি বলেন, “গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার যেমন জরুরি, তেমনি একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার দায়ে জামায়াতে ইসলামীরও বিচার হওয়া দরকার।”

ফিরোজ সমাবেশে অংশ নেওয়া এমন ব্যক্তি ও সংগঠনেরও বিচার দাবি করেন যারা চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে স্লোগান দিয়েছে এবং জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান এজেন্ডা হওয়া উচিত অভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন, প্রকৃত দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচার এবং প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কার করে দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।”

তবে তিনি অভিযোগ করেন, “সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো আস্থাশীল ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বরং সময়ে সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে মব তৈরি করে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে প্রবাহিত করে সাম্রাজ্যবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ করে দেওয়ার কৌশল হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে।”