শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৬ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

রোজা ও রমজান: পর্ব- ০২ বিষয়: রমজানের ফযিলত

মুফতি মুহাম্মদ নাসিরুদ্দীন

 আপডেট: ১২:১৩, ২৪ মার্চ ২০২৩

রোজা ও রমজান: পর্ব- ০২ বিষয়: রমজানের ফযিলত

এই মাহে রমযানের রয়েছে অনেক ফযিলত। এবার আমরা তথ্যভিত্তিক কয়েকটি ফযিলতের কথা জানার চেষ্টা করব।

১. রমযান হলো কুরআন নাযিলের মাসঃ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন- 
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِىْ أُنْزِلَ فِيْهِ الْقُرْآنُ 
‘রমযান মাস, এতে নাযিল করা হয়েছে আল-কুরআন।’ শুধু কুরআন মাজীদ নয় বরং হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর সহীফা, তাওরাত, যাবুর, ইজ্ঞীলসহ সকল ঐশী গ্রন্থ এই রমযান মাসেই নাযিল করা হয়েছে। যে মাসে কুরআন এবং অন্যান্য আসমানী গ্রন্থ নাযিল করা হয়েছে তার ফযিলত প্রমাণিত হওয়ার জন্য আর কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না।   


২. রমযানের একটি বিশেষ রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তমঃ কুরআনে এসেছে-
إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِىْ لَيْلَةِ الْقَدْرِ، وَمَا أَدْرَاكَ مَا لَيْلَةُ الْقَدْرِ، لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ
‘একে নাযিল করা হয়েছে লাইলাতুল কদরে, আপনি জানেন কি লাইলাতুল কদর কি? লাইলাতুল কদর হচ্ছে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। হাদীসে এসেছে-
أَتَاكُمْ رَمَضَانُ شَهْرٌ مُبَارَكٌ فَرَضَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَلَيْكُمْ صِيَامَهُ تُفْتَحُ فِيْهِ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَتُغْلَقُ فِيْهِ أَبْوَابُ الْجَحِيْمِ وَتُغَلُّ فِيْهِ مَرَدَةُ الشَّيَاطِيْنِ لِلَّهِ فِيْهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ مَنْ حُرِمَ خَيْرَهَا فَقَدْ حُرِمَ
‘তোমাদের নিকট বরকতময় রমযান মাস এসেছে। মহান আল্ল¬াহ তোমাদের উপর এই মাসের সিয়াম ফরয করেছেন। এই মাসে আসমানের দরজাগুলো খোলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। দুষ্ট শয়তানদেরকে শৃঙ্খলিত করা হয়। এই মাসে এমন একটি রাত আছে যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যে ব্যক্তি সেই রাতের কল্যান থেকে বঞ্চিত সে একেবারেই বঞ্চিত হতভাগা।’ সুনানুন নাসাঈ, হাদীস- ২১০৫; মিশকাত, হাদীস-১৯৬২

৩. জান্নাতের দরজা খোলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়, শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় শয়তানকেঃ হাদীসে এসেছে-
إِذَا دَخَلَ رَمَضَانُ فُتِحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ وَسُلْسِلَتْ الشَّيَاطِيْنُ
‘রমযান মাস যখন আগমন করে তখন জান্নাতের দরজাগুলো খোলে দেয়া হয়, এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, এবং শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়।’ সহীহ বুখারী,হাদীস- ৩২৭৭

৪. রমযান মাস দুআ কবুলের মাসঃ হাদীসে এসেছে- 
وَإنَّ لِكُلِّ مُسْلِمٍ فِىْ كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ
‘রমযানের প্রত্যেক দিন-রাতে মুসলিমের দুআ কবুল করা হয়।’ মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস-৪৭৯৩

৫. রমযান জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের মাসঃ হাদীসে এসেছে-
وَنَادَى مُنَادٍ: يَا بَاغِىَ الْخَيْرِ أَقْبِلْ، وَيَا بَاغِىَ الشَّرِّ أَقْصِرْ وَلِلَّهِ عُتَقَاءُ مِنَ النَّارِ وَذَلكَ كُلُّ لَيْلَةٍ
‘রমযান মাসে একজন ঘোষণাকারী এই বলে ঘোষণা দিতে থাকেন যে, হে সৎকর্মের অনুসন্ধানকারী! তুমি অগ্রসর হও। হে অসৎকর্মের অনুসন্ধানকারী! তুমি থেমে যাও। মনে রেখো এই মাসের প্রত্যেক রাতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জাহান্নাম থেকে অনেক মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। তিরমিযি, হাদীস- ৬৮২; ইবনে মাযাহ, হাদীস-১৬৪২ এবং ফাতহুল বারী)
যেহেতু রমযান মাস অত্যান্ত গুরুত্বপূর্র্ণ তাই মাহে রমযানে আমাদের জন্য উচিত হচ্ছে সুন্দর একটি রুটিন বা কর্মসূচী তৈরী করে নেওয়া। যেন রমযানকে নিয়মিতভাবে সুন্নাহ ভিত্তিক পরিচালিত করার মাধ্যমে জীবনকে গতিময় করা যায়। লাভ করা যায় রমযানের আসল উদ্দেশ্য। জীবনকে গড়ে তোলা যায় সুন্দর ও সফল করে।

মন্তব্য করুন: