রোজা ও রমজান: পর্ব- ০৯ বিষয়: সদকাতুল ফিতর কী ও কেন?

৮. সাদকাতুল ফিতর আদায় করাঃ সাদকাতুল ফিতর হচ্ছে ভুলের ক্ষতিপূরণ। আমরা মানুষ। আমাদের ভুল-ভ্রান্তি হয়। রমযানের সিয়াম পালনেও ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে। যেমন সিয়ামরত অবস্থায় অনর্থক কথা ও কাজ করা ইত্যাদি। সেসব ভুলের ক্ষতিপূরণের জন্যই সাদকাতুল ফিতর। আত্মশুদ্ধির জন্যও সাদকাতুল ফিতর। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদি.) বর্ণিত হাদীসে এসেছে-
فَرَضَ رَسُوْلُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِيْنِ مَنْ أَدَّاهَا قَبْلَ الصَّلاَةِ فَهِىَ زَكَاةٌ مَقْبُوْلَةٌ وَمَنْ أَدَّاهَا بَعْدَ الصَّلاَةِ فَهِىَ صَدَقَةٌ مِنَ الصَّدَقَاتِ.
‘রাসূলুল্লাহ (সা.) ফিতরাকে ওয়াজিব করেছেন। যেন সিয়াম পালনকারী বাজে কথা, অশ্লীল কথা (এ জাতীয় ছোট-খাট অপরাধ) থেকে পবিত্রতা লাভ করেন। আর দরিদ্র মানুষেরা যেন খাদ্য লাভ করে। যে ব্যক্তি সালাতুল ঈদের আগে তা আদায় করবে সেটা তার জন্য কবুলকৃত যাকাত বলে গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি সালাতুল ঈদের পরে আদায় করবে সেটা তার জন্য একটি সাধারণ দান বলে গণ্য হবে।’ আবু-দাউদ, হাদীস-১৬১১
সাদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। যদি কেউ নিজের মৌলিক প্রয়োজন ও ঋণ ব্যতীত নিসাবের মালিক হয় তার পক্ষ থেকে সাদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। সেই নিসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর পূর্ণ হওয়া শর্ত নয়। নাবালেগ ও পাগলের সম্পদ থেকেও সাদকাতুল ফিতর আদায় করতে হয় যদি তারা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়।
উত্তম হলো সালাতুল ঈদের পূর্বেই সাদকাতুল ফিতর আদায় করা। যেন দরিদ্র মানুষেরা ঈদের পোশাক এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী যোগাড় করে নিতে পারে। সালাতুল ঈদের পরে আদায় করা মাকরূহ। তবে বিশেষ কারণে পরে আদায় করলেও মাকরূহ হবে না। একজনের ফিতরা কয়েকজনকে এবং কয়েকজনের ফিতরা একজনকে দেয়া যাবে। এতে কোনো অসুবিধা নেই। দিতে হবে ঐ সমস্ত দরিদ্র মানুষকে যারা যাকাত পাবার উপযুক্ত। সুতরাং যাদের জন্য যাকাত জায়েয নেই, তাদের জন্য সাদকাতুল ফিতর গ্রহণ করাও জায়েয নেই।
৯। ইতিকাফ করাঃ আমরা এ সম্পর্কে একটু পরেই বিস্তারিত আলোচনা করব। ইনশাআল্লাহ।
মুফতি মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন
সাতাউক মধ্যগ্রাম, লাখাই, হবিগঞ্জ
আমলের কথা জানতে ইউটিউবে সার্চ করুন, 01712961470