ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পাকিস্তানে উৎসবের আমেজ, চলছে মিষ্টি বিতরণ

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির পর পাকিস্তানে আনন্দ, মিষ্টি বিতরণ
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছে উচ্ছ্বাস ও স্বস্তির আবহ। লাহোর, ইসলামাবাদ, মুজাফফরাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় নেমে সাধারণ মানুষ ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে। অনেকেই যুদ্ধবিরতিকে জাতীয় গর্ব এবং বহু প্রতীক্ষিত শান্তির মুহূর্ত হিসেবে দেখছেন।
লাহোরের এক তরুণ, মোহাম্মদ ফাতেহ বলেন, “আজ আমাদের দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। পাকিস্তানি বাহিনীর দৃঢ় অবস্থানের ফলে ভারতকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে বাধ্য হতে হয়েছে।”
ইসলামাবাদের গৃহিণী যুবাইদা বিবি বলেন, “যুদ্ধ শুধু কান্না আর ক্ষয়ক্ষতি বয়ে আনে। এখন যে শান্তি ফিরে এসেছে, তা যেন ঈদের আনন্দের মতো। এটা আমাদের বিজয়।”
পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদে স্থানীয় বাসিন্দারাও যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, শান্তি মানে তাদের বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা। স্থানীয় বাসিন্দা জুলফিকার আলী বলেন, “আমরা অনেক কষ্ট সহ্য করেছি। এবার মনে হচ্ছে, দুই দেশ সত্যিকার অর্থে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে।”
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার পরপরই বিভিন্ন শহরে মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে এবং আনন্দ উদযাপন করে। জায়গায় জায়গায় চলছে মিষ্টি বিতরণ।
এর আগে, শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও প্রথম ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির তথ্য প্রকাশ করেন। এরপর বিষয়টি নিশ্চিত করে দুই দেশের কর্মকর্তারা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানান, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টা)। তিনি বলেন, এই সমঝোতা অর্জনের পেছনে অন্তত ৩০টি দেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ছিল, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
ইসহাক দার আরও বলেন, “পাকিস্তান সবসময়ই শান্তির পক্ষে কথা বলেছে, তবে কখনোই সার্বভৌমত্বের বিনিময়ে নয়।”
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ডিজিএমও তার ভারতীয় সমকক্ষকে ফোন করে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন। এরপর উভয়পক্ষ একটি চুক্তিতে পৌঁছায়, যার আওতায় স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রপথে সব ধরনের সামরিক অভিযান আজ বিকেল ৫টা (বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৫টা) থেকে বন্ধ থাকবে।
বিক্রম মিশ্রি আরও জানান, দুই দেশের সেনা কর্মকর্তারা পুনরায় ১২ মে দুপুর ১২টায় পরবর্তী আলোচনা করবেন।