শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১৩ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

মহিলা

নারীরাও তামাকের কারণে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে

 আপডেট: ১৯:২২, ১৭ এপ্রিল ২০২২

নারীরাও তামাকের কারণে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, নারীদের মধ্যে ধূমপায়ীর হার কম হলেও ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবনের হার পুরুষদের তুলনায় বেশি।

তিনি বলেন, ফলে নারীদের মধ্যে বৃহত্তর একটি জনগোষ্ঠি তামাকের কারণে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। পাবলিক প্লেসে ধূমপানের কারণে অধূমপায়ী নারী ও শিশুরাও মারাত্মক স্বাস্থ্যগত ক্ষতির শিকার হচ্ছে।

ইন্দিরা আজ বাংলাদেশ শিশু একাডেমির উদ্যোগে একাডেমির সম্মেলন কক্ষে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) আয়োজিত ‘পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের  প্রয়োজনীয়তা’ সেমিনারে  প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৫ বছরের উর্ধ্বে জনগোষ্ঠির মধ্যে পরিচালিত গ্লোবাল এডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে ২০১৭ অনুযায়ী বাংলাদেশে ৩৫.৩% বা ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ মানুষ (৪৬% পুরুষ ও ২৫.২% নারী) তামাক সেবন করে। ১৮% বা ১ কোটি ৯২ লক্ষ মানুষ (পুরুষ ৩৬.২% ও নারী ০.৮%) ধূমপান করে। ২০.৬% বা ২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ (পুরুষ ১৬.২% ও নারী ২৪.৮%) ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন করে। 

ধূমপান ও তামাক সেবনের ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে  প্রতিবছরে ৮০ লক্ষাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এর মধ্যে পরোক্ষ ধূমপানের কারণে ‘পৃথিবীতে প্রতিবছর ১২ লক্ষাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করে, যাদের অধিকাংশ শিশু ও নারী। বাংলাদেশে বছরে একলক্ষ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে মারা যায়। এসব রোগাক্রান্ত  ব্যক্তির চিকিৎসা ব্যয় হয় ৩০ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা যা তামাক খাত থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের চাইতে বেশি।

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ধুমপান মুক্ত দেশ হবে’-এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পাবলিক প্লেসে ধূমপানমুক্ত, তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধ করায় ২০০৯ সালের (৪৩.৩ শতাংশ) তুলনায় বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০১৭ (৩৫.৩ শতাংশ) সালে আট শতাংশ কমেছে। 

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দপ্তর-সংস্থা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা কার্যক্রমের মাধ্যমে মাদক ও তামাক নিয়ন্ত্রণে আরো জোরদার ভূমিকা পালন করবে বলে সেমিনারে আশাবাদ ব্যক্ত করে ইন্দিরা।

সেমিনারের বক্তারা নারী ও শিশুর তামাকের ক্ষতি ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমিয়ে আনতে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরে আলোচনা করা হয়।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনামের সভাপতিত্বে সেমিনারে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মূঃ আনোয়ার হোসেন  হাওলাদার।  

সেমিনারের মূখ্য আলোচক ছিলেন ‘মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা’ (মানস) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী ও অতিরিক্ত সচিব হোসেন আলী খোন্দকার ও প্রবন্ধ উপস্থাপক সৈয়দ মাহবুবুল আলম।

মন্তব্য করুন: