বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১১ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মহিলা

হে প্রিয় বোন ইসলাম তোমাকে সম্মানের জীবন দিয়েছে

 প্রকাশিত: ২১:০১, ৩ অক্টোবর ২০২০

হে প্রিয় বোন ইসলাম তোমাকে সম্মানের জীবন দিয়েছে

হে প্রিয় বোন আজকে তোমাকে লক্ষ্য করে কিছু কথা বলবো। এমন এক মুহূর্তে তোমার জন্য এই কথা গুলো বলছি, যখন সর্বত্রই ফিত্নার ছড়াছড়ি জাহেলিয়ার আঁধারে গোটা সমাজ অন্ধকারাচ্ছন্ন।

 

কাফের মুশরিকরা মুসলিম নারীদের কে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। হে বোন- ইসলামে নারীর অবদান অনস্বীকার্য। কারণ মুসলিম নারীরাই আদর্শ সমাজ বিনির্মানের কারিগর। মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি এর শ্রেষ্ঠ উম্মত কে তোমরাই মাতৃত্বের ভালোবাসা দিয়ে লালন পালন করছো। প্রজন্মের পর প্রজন্ম মুসলিম শিশুরা তোমাদের কোলে-পিঠেই বড়ো হয়েছে। তোমাদের হাত ধরেই বেড়ে উঠেছে। তোমরাই শিশুদের কে আদর স্নেহ করে আদব আখলাক ইসলামী সভ্যতা সাহসিকতা শিখিয়েছো। হে বোন- ইতিহাস সাক্ষি উম্মাহর বড়ো বড়ো দুঃসাহসী মুজাহিদ তোমাদের মতো মুসলিম নারীদের ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলো।

 

হে বোন- উম্মাহর বড়ো বড়ো সাহসী বীরদের তোমরাই মাতৃত্বের ভালোবাসা দিয়ে লালন পালন করেছিলে। মোহাম্মদ বিন কাসেম, তারেক বিন জিয়াদ ,সালাহ্উদ্দিন আইয়ুবী রহ এর মতো বড়ো বড়ো বীরদের তোমরাই সাহসিকতা শিখিয়েছিলে। যার ফলে তারা ইতিহাস খ্যাত বীর হয়েছে। বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে প্রান্তে কালেমার ঝান্ডা সমুন্নত করেছে।

 

হে বোন- ইমাম আবু হানিফা এর মতো যুগ শ্রেষ্ঠ ফকীহ্ কে গর্ভে ধারণ করেছিলে? ইমাম শাফেয়ী, ইমাম মালেক, ইমাম আহম্মদ বিন হাম্বল, ইমাম ইবনে তাইমিয়ার মতো যুগশ্রেষ্ট উলামায়ে কেরামগনকে প্রতিপালন করেছিলো কে? তাদেরকে এতো বড়ো ইমাম হওয়ার স্বপ্ন যুগিয়েছিলো কে? হে বোন-তোমরাই তাদের কে উত্তমভাবে প্রতিপালন করেছিলে। যার ফলে তারা যুগশ্রেষ্ট আলেম হয়েছে। জগৎ বিখ্যাত ইমাম হয়েছেন।

 

হে বোন আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে মুসলিম নারীদের অনেক ভূমিকা রয়েছে। গোটা মুসলিম উম্মাহ মুসলিম মায়েদের কাছে চিরকাল ঋনি থাকবে। হে বোন কাফের মুশরিকরা তোমার এই সোনালী ঐতিহ্য নষ্ট করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করেছে।

 

হে প্রিয় বোন তারা নারী অধিকারনামীয় ধূর্ত শ্লোগান দিয়ে তোমাকে তোমার রাজকীয় সিংহাসন থেকে অপসারিত করতে চাচ্ছে। তারা তোমাকে শিখাচ্ছে পুরুষের সাথে সমঅধিকারের জন্য লড়াই করো, হিজাব ছুড়ে ফেলে বেপর্দা হয়ে রাস্তায় বেড়িয়ে আসো। আর কতদিন চার দেয়ালের মাঝে আবদ্ধ হয়ে থাকবে!

 

হে বোন বাস্তবতা হচ্ছে- যারা তোমাকে নারী অধিকারের এই ধূর্ত শ্লোগান শেখাচ্ছে, এই মিথ্যা আশ্বাস দিচ্ছে, তাদের দেশেই নারীরা সবচেয়ে বেশী নির্যাতিত নারীরা সবচেয়ে বেশী লাঞ্চিত। খুবই পরিতাপের বিষয়- যাদের দেশে নারীদের পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। নারীদের ভোগ সামগ্রী মনে করা হয়, যাদের দেশে নারীরা সবচেয়ে বেশী নির্যাতিত-নিপীড়িত সেই নির্লজ্জ্বরাই আজ মুসলিম নারীদের কে নারী অধিকার! শিখাচ্ছে।

 

হে প্রিয় বোন ইসলাম তোমাকে সম্মানের জীবন দিয়েছে। ইসলাম তোমাকে লাঞ্চনার জীবন থেকে মুক্তি দিয়েছে। এটা কি তোমার জন্য সম্মানের নয়? কখনো তুমি আনুগত্যশীল মেয়ে হিসেবে থাকবে ।কখনো তুমি চক্ষু শীতলকারী স্ত্রীর ভূমিকা পালন করবে। কখনও তুমি স্নেহময়ী মা হিসেবে তোমার কলিজার টুকরা সন্তান কে আদর স্নেহ করে উত্তমভাবে প্রতিপালন করবে, এর চেয়ে সম্মানের দায়িত্ব আর কি হতে পারে ? এর চেয়ে সৌভাগ্যের বিষয় আর কি হতে পারে ? হে বোন তুমি নিজেকে মূল্যায়ন করো।

 

হে প্রিয় বোনকাফের মুশরিকদের মিথ্যা শ্লোগানে প্রতারিত না হয়ে তুমি তোমার নিজেকে চেনার চেষ্টা করো। পরিশেষে তোমাকে লক্ষ্য করে বলছিকতদিন তুমি জাহেলিয়ার মধ্যে ডুবে থাকবে। আর কতদিন তুমি বেপর্দা হয়ে ঘুরে বেড়াবে। আর কতোদিন তুমি নাটক সিনেমা দেখে দিন কাটাবে? আর কত দিন তুমি স্বামীর অবাধ্যচারণ করবে? হে বোন এই উদাসীনতা আর কতকাল? আর কতদিন তুমি নামাজ না পড়ে ঘুমিয়ে থাকবে। আর কত সময় তুমি তোমার প্রভুকে ভুলে থাকবে? আর কতো সময় তুমি তোমার প্রতিপালক সম্পর্কে উদাসীন হয়ে থাকবে। হে প্রিয় বোন- এই দুনিয়াতে তুমি কত দিন বেচে থাকবে? বেশী থেকে বেশী ৫০ বছর অথবা ৬০ বছর এরপর অবশ্যই তোমাকে মৃত্যুবরন করতেই হবে।

 

হে প্রিয় বোন- তোমাকে কবরে যেতে হবে, তোমাকে তোমার প্রতিপালকের সামনে পুঃনত্থিত হতে হবে। অতপর হয়তো তুমি জান্নাতের অধিবাসী হবে বা জাহান্নামের। হে বোন তুমি মনে রেখো তোমার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর ফেরেশতা তোমার কাছে অবশ্যই আসবে এবং তোমাকে যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।

 

হে বোন অন্ধকার কবরের ভয়াবহতা স্বরণ করো। যেখানে তুমি একাকী থাকবে। সেই মূহুর্তটা কতই না কঠিন আর ভয়াবহ হবে? মুনকার-নাকীর তোমাকে এসে প্রশ্ন করবে। প্রশ্নের উত্তরের ব্যপারে তোমার কি প্রস্তুতি রয়েছে? হে বোন কেয়ামতের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা স্বরণ করো। যেদিন কেও কারো উপকারে আসবে না। সবাই পাগলের মতো ছুটতে থাকবে। সেদিন কোন সাহায্যকারী থাকবেনা।

 

হে বোন জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তির কথা স্বরণ করো। যেখানে চিৎকার শোনার মতো কেও থাকবেনা। সময় থাকতে গুনাহ থেকে তাওবা করো তোমার প্রতিপালকের দিকে ফিরে আস। দুনিয়ার এই সংক্ষিপ্ত সময়টাকে, দুনিয়ার এই সংক্ষিপ্ত জীবনটাকে আল্লাহর নির্দেশিত পথে ব্যয় করো। আল্লাহ সবাইকে বোঝার তওফিক দিন। আমিন।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: