শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, বৈশাখ ২৬ ১৪৩২, ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৬

ব্রেকিং

আইভীর বাড়িতে পুলিশ, অনুসারীদের জটলা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের পরবর্তী ধাপের আলোচনার কর্মপরিকল্পনা দ্রুত চূড়ান্ত করার নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের সাফল্য চাই: মির্জা ফখরুল তথ্যযুদ্ধ: কতটা সত্যি বলছে ভারত ও পাকিস্তান? ভারত-পাকিস্তানের সংঘাতে এরপর কী? পাকিস্তান ভারত সীমান্তে উত্তেজনার নতুন অধ্যায়: ক্ষেপণাস্ত্র, হামলা ও তথ্যযুদ্ধ আওয়ামী লীগের দুই সহযোগী সংগঠন নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে: আসিফ মাহমুদ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনে নেতৃত্ব পরিবর্তন: স্নিগ্ধর পদত্যাগ আবদুল হামিদের দেশত্যাগে জড়িতদের ধরা হবে, না হলে আমিই চলে যাব: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সরকার সংবাদপত্রের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে চায় : তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা প্রথম আমেরিকান পোপ হলেন রবার্ট প্রিভোস্ট ২০২৫: টেকনোলজির ঝড় উঠছে! ভারত-পাকিস্তানে যুদ্ধের দামামা: বাংলাদেশে কী প্রভাব, করণীয় কী রক্তের প্রতিটি ফোঁটার বদলা নেব: শেহবাজ শরিফ

স্পেশাল

ভারত-পাকিস্তানে যুদ্ধের দামামা: বাংলাদেশে কী প্রভাব, করণীয় কী

 প্রকাশিত: ১২:১৮, ৮ মে ২০২৫

ভারত-পাকিস্তানে যুদ্ধের দামামা: বাংলাদেশে কী প্রভাব, করণীয় কী

দুই পরমাণু শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তানের সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কায় দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা আবার বড় ধাক্কা খেল। যুদ্ধের প্রত্যক্ষ অংশীদার না হয়েও এর উত্তাপ থেকে বাংলাদেশের একেবারে গা বাঁচানোর সুযোগ কম; পরোক্ষ অভিঘাতে ক্ষতির আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

একের পর এক ঘটনাপ্রবাহে তুঙ্গে থাকা প্রতিশোধ স্পৃহার মধ্যে প্রতিবেশী দুই দেশকে সর্বাত্মক যুদ্ধে না জড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সরকারের এ অবস্থানের সঙ্গে একমত পোষণ করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হলে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের উপর এর প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশের এমন কিছু করা উচিত হবে না, যাতে যুদ্ধের পক্ষ মনে হয়।

সর্বব্যাপী যুদ্ধের ঝুঁকি বিবেচনায় উভয় দেশের পিছিয়ে আসার সম্ভাবনা দেখলেও পরিস্থিতি জটিল হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারছেন না তারা।

কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার শোধ নিতে ভারত বুধবার প্রথম প্রহরে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। জবাবে পাকিস্তান ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গোলা বর্ষণ করে।

পাকিস্তান বলেছে, ভারতের হামলায় তাদের অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অন্তত ১৫ জন নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে দেশটির পুলিশ।

ভারতীয় বিমানবাহিনীর অন্তত ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। তবে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে তিনটি যুদ্ধবিমান ‘বিধ্বস্ত’ হওয়ার তথ্য দিয়েছে রয়টার্স। ভারতের তরফে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

যুদ্ধ শুরুর এমন দামামা বেজে ওঠার পরিস্থিতিতে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে উঠলে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ।

দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশকে শান্ত থাকার এবং সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।

বুধবার বাংলাদেশের অবস্থান জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “ভারত ও পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সরকার।

“এ পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং উভয় দেশকে শান্ত থাকার, সংযম প্রদর্শনের এবং পরিস্থিতি ঘোলাটে করে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে।”

বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “আঞ্চলিক শান্তি, প্রগতি এবং স্থিতিশীলতার মনোভাব থেকে বাংলাদেশ আশা করছে, কূটনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে উত্তেজনা কমে আসবে এবং এ অঞ্চলের মানুষের মঙ্গলের স্বার্থেই শান্তি বজায় থাকবে।”

এদিকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে যাতে কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সীমান্ত এলাকার পুলিশ সুপারদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বাহিনীর প্রধান বাহারুল আলম।

প্রতিবেশী দুই দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতির সুযোগে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে এমন আশঙ্কায় সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

 

 

বাংলাদেশে কী প্রভাব

মাঝে রাতে পাকিস্তানে ভারতের আক্রমণের পর দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের উত্তাপ সকালের ভাগেই ছড়িয়েছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে। যুদ্ধের আতঙ্কে দিনের লেনদেনের শুরুতেই ভীত হয়ে কম দামে শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করেন বিনিয়োগকারীরা। এতে তড়তড়িয়ে সূচক নামতে থাকে। দিনশেষে একদিনেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে প্রায় ১৫০ পয়েন্ট।

যুদ্ধ লেগে যাওয়ার আশঙ্কাতেই এমন যখন পরিস্থিতি তখন প্রতিবেশী দেশ দুটি সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তা পুঁজিবাজারের মত ব্যবসা-বাণিজ্য আর অর্থনীতির সব খাতেই তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে বাংলাদেশে বলে মনে করেছেন অনেকেই।

দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘাতের দিনে ভারত থেকে বিএসএফ বাংলাদেশের তিন জেলার বিভিন্ন সীমান্তে ঠেলে দিয়েছে ১২৫ জনকে। তাদের আটক করে যাচাই-বাছাই করছে বিজিবি।

একই দিন ঢাকামুখী তিনটি ফ্লাইটকে পথ পরিবর্তন করতে হয়েছে। ওই ফ্লাইটগুলো কুয়েত ও তুরস্ক থেকে আসছিল।

এর মধ্যে তুরস্ক থেকে রওনা হওয়া টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট পাকিস্তানের আকাশপথ এড়িয়ে ওমানের মাসকট বিমানবন্দরে অবতরণ করে। কুয়েত থেকে রওনা হওয়া জাজিরা এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটকে ঘুরিয়ে দুবাইয়ে নেওয়া হয়। একই এয়ারলাইন্সের আরেকটি ফ্লাইট কুয়েতে ফিরে যায়।

নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই বড় প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যুদ্ধের ফলে অন্য দেশের উপর বাণিজ্য, যোগাযোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব এমনিতে চলে আসে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক নৈকট্যের কারণে সেই প্রভাবটা বেশিই হয়।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক শাফকাত মুনীর বলেন, “আমাদের ওপরে সরাসরি প্রভাবতো ওইভাবে নাই। কিন্তু এই অঞ্চলে যখনই সংঘাত বা বিরোধ বা যুদ্ধ যেটাই হোক না কেন, তার একটা প্রভাব অবশ্যই আমাদের ওপর আসবে।

“প্রভাব কীভাবে আসবে? এক নম্বর হল, দুটি বড় দেশের মধ্যে যখন এ ধরনের লড়াই হয়, তখন এটার কারণে আঞ্চলিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বিঘ্ন হচ্ছে। তারপর বিভিন্ন রকমের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হবে।”

আকাশে ঝুঁকির কারণে ঘুরপথে উড়োজাহাজ চলাচলে ব্যয়ে বেড়ে যাওয়া এবং ভারতের বিমানবন্দর বন্ধের প্রভাব এরইমধ্যে পড়ার কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের (বিআিইপিএসএস) এই সিনিয়র রিসার্চ ফেলো।

 

খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে বুধবার অনুপ্রবেশকারী কয়েকজন।

খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে বুধবার অনুপ্রবেশকারী কয়েকজন।

তিনি বলেন, “ভারতের সাথে আমাদের যেহেতু চার হাজার কিলোমিটারের বেশি সীমান্ত রয়েছে, আমরা দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ হিসেবে, যদি দক্ষিণ এশিয়ার দুটি বড় দেশের মধ্যে সংঘাত হচ্ছে, তার প্রভাব শুধু বাংলাদেশ না, পুরো অঞ্চলের উপরই পড়বে।”

সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমদ বলেন, বাংলাদেশ চায়, ভারত-পাকিস্তান যেন যুদ্ধ থেকে সরে আসে। কারণ বিশ্বব্যাপী যুদ্ধাবস্থা চলছে। এমনিতে পরিস্থিতি ভালো না। এর মধ্যে এই সংঘাতে অবস্থার আরও অবনতি হল, স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হল।

“ব্যবসা-বাণিজ্য সব ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যাতায়াত, যোগাযোগ সবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই রকম সাংস্কৃতিক যোগাযোগের দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে যে আদান-প্রদান তা কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে। এটা সবার উপরে পড়ছে, আমাদের উপরও পড়ছে।”

 

 

কী করণীয় বাংলাদেশের

পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যালোচনার পাশাপাশি ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ থেকে বাংলাদেশ যেন দূরে অবস্থান করে, সেই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা। এদিক থেকে সরকারের তরফে দায়িত্ব জ্ঞানহীন কোনো মন্তব্য না করার পরামর্শও এসেছে তাদের দিক থেকে।

বিআইপিএসএসের ফেলো শাফকাত মুনীর বলেন, “বাংলাদেশ সরকারের দিক থেকে এখন পরিস্থিতিতে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা, দুপক্ষকে শান্তিমূলক উপায় বেছে নেওয়ার জন্য আহ্বান করা এবং যাতে সমস্যাটির একটি আশু সমাধান হয়, সেজন্য আশা করা বা প্রচেষ্টা করা। এছাড়া আর তেমন কিছু নাই।

 

 

“আমাদের খুব নিবিড়ভাবে ব্যাপারটিকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে, পর্যালোচনা করতে হবে। কারণ এটা শুধুমাত্র ভারত-পাকিস্তানের বিষয় না।”

তিনি বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে দায়িত্বহীন কোনো বক্তব্য দেওয়া ঠিক হবে না। কিছুদিন আগে আমরা দায়িত্বহীন বক্তব্য দেখেছি। এটা উত্তেজনা তৈরি করেছে। এই ধরনের দায়িত্বহীন বক্তব্য যাতে ভবিষ্যতে না আসে, সেটাই আমরা আশা করব।

“আমাদের আশাটা হল, এই অঞ্চলে একটি শান্তি, স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে এবং সব দেশের মধ্যে এক ধরনের সহযোগিতা থাকবে। সেটা তাড়াতাড়ি ফিরে আসে, সেটা আমরা আশা করব।”

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে বলে বাংলাদেশ যেন ভারতকে ‘না খোঁচায়’ সেই পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) সাবেক চেয়ারম্যান মুন্সি ফয়েজ।

তিনি বলেন, “ভারত পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধে জড়ায়ে পড়ছে বলে এখানে আমরা তাদেরকে খোঁচাব, সেটাওতো না। সুতরাং আমাদেরকে সেই লক্ষ্যটা ঠিক রাখতে হবে যে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে হবে, সঠিক পথে নিয়ে আসতে হবে…

“যাতে ভারত আমাদের সমস্যাগুলো বোঝে এবং আমাদের অসদাচরণ না করে। আমরা যদি তাদের সাথে সদাচরণ না করি, তাহলে তাদের থেকে আমরা কীভাবে আশা করব সদাচরণ।”

আরও পড়ুন-

ভারত যেভাবে লোকজনকে ঠেলে দিচ্ছে, তা 'ঠিক নয়': খলিলুর

ভারত না পাকিস্তান, সামরিক শক্তিতে কে বেশি বলবান

ভারত-পাকিস্তানকে লড়াইয়ের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফেরাতে পারবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়?

পাকিস্তান-ভারত পরমাণু যুদ্ধের পূর্বাভাস: আলোচনায় ৬ বছর আগের সেই প্রতিবেদন

বালাকোট থেকে অপারেশন সিঁদুর, ৬ বছরের ব্যবধানেও আশ্চর্য কিছু মিল

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের ব্যস্ততার মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ঠিক করার দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ৫ অগাস্টের অভ্যুত্থানের পর থেকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ‘খুবই খারাপ একটা পর্যায়ে’।

“বাংলাদেশ যাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে চাইছে, তাদের সঙ্গে সেভাবে আগাচ্ছে, তাও মনে হয় না’। এক্সটার্নাল পরিস্থিতি যেহেতু খারাপ, সে অবস্থায় আমাদের ইন্টারনাল বিষয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।”

এক্ষেত্রে দেশের অভ্যন্তরে সংস্কার, নির্বাচন এবং জাতীয় ঐকমত্যের উপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “সেসব কাজের উপর জোর দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থেকে স্থায়ী সরকারের দিকে গুরুত্ব সহকারে আগানোর চেষ্টা করি, তাহলে হয়ত কিছু ভালো কাজ হবে আর কি।”

সর্বাত্মক যুদ্ধ কি আসন্ন?

প্রথম দিন ভারতের বড় আক্রমণের পর এবং পাকিস্তানের বক্তব্য থেকে সর্বাত্মক যুদ্ধ থেকে দুদেশের সরে আসার সুযোগ দেখলেও পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্লেষকরা।

মঙ্গলবার মাঝরাতের ঘটনা বিশ্লেষণ করে সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ বলেন, ভারতের দিক থেকে বেশ কয়টি বড় রকমের আক্রমণ করা হয়েছে পাকিস্তানে। এর আগেই কয়েকদিন ধরে আক্রমণ, প্রতি আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ চলছিল। ছোটো ছোটো ঘটনা ঘটছিল সীমান্তে।

“কালকে বড় পরিসরে ভারত যেটা করেছে, তারা বলেছে যে, তারা পাকিস্তানি কোনো সামরিক ঘাঁটি বা সামরিক স্থাপনায় আক্রমণ করে নাই, তারা আক্রমণ করেছে সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী স্থাপনাগুলোতে। তারা ‘উচিত শিক্ষা দিয়েছে’, এই রকম একটা কথা বলেছে।”

এর মধ্য দিয়ে ভারত যে রকম আত্মতুষ্টি পাচ্ছে, তেমনি পাকিস্তানও ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত দেওয়ার দাবি করে একই রকম অনুভূতির প্রকাশ ঘটাচ্ছে বলে তুলে ধরেন এই বিশ্লেষক।

“আর পাকিস্তানের দিক থেকে হল, পাকিস্তান এটা প্রতিহত করতে যেয়ে ভারতের কয়েকটি বিমানও ভূপাতিত করেছে বলে আমরা খবর পাচ্ছি, দেখছি। সুতরাং দুপক্ষই কিছু বলার সুযোগ পাচ্ছে তাদের দেশের মানুষকে যে, একজন বলল, আমরা উচিত শিক্ষা দিয়ে দিয়েছি, আরেকপক্ষও বলছে, আমরা উচিত জবাব দিয়ে দিয়েছি,” বলেন মুন্সি ফয়েজ।

এখন দুপক্ষ এখান থেকে যুদ্ধের দিকে পা না বাড়িয়ে সরে এলে ‘আশ্চর্য হব না’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তারপরও তারা যদি মনে করে যে, পানি বন্ধ করে দেওয়া, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়া, আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়ার পর এতটুকুতে হবে না, আরেকটু মারধর করা দরকার। তাহলে দুপক্ষ আরও দুয়েকটা ঘটনা ঘটায়া হয়ত বা বড় যুদ্ধ না লাগায়া সরে আসতেও পারে।”