আরপিও সংশোধনে সমর্থন, কিছু বিষয়ে আপত্তি ও সতর্কতা

ইসির প্রস্তাবে বেশির ভাগ দল সন্তুষ্ট, তবে অনুদান, ভোট বাতিল ও প্রয়োগ নিয়ে ভিন্নমত।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের যে প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে, তাতে বিএনপিসহ অনেক দলের দাবি—ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সশস্ত্র বাহিনীকে ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থার’ সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) বাতিল—স্থান পেয়েছে। ফলে এসব বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। তবে কিছু প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে তারা।
সবচেয়ে বেশি আপত্তি এসেছে রাজনৈতিক দলের অনুদান সর্বক্ষেত্রে ব্যাংকের মাধ্যমে নেওয়ার প্রস্তাবে। বিএনপি, গণসংহতি আন্দোলন ও এবি পার্টি মনে করে, ক্ষুদ্র অনুদান গ্রহণে শিথিলতা থাকা উচিত এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির কারণে অনেক দাতা রেকর্ডে নাম রাখতে চান না। বিপরীতে জামায়াতে ইসলামী এ প্রস্তাবে একমত।
আরেকটি আলোচিত বিষয় হলো অনিয়মের অভিযোগে পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা। বিএনপি ও জামায়াত মনে করে, এ ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে কঠোর প্রমাণ ও তদন্ত জরুরি, যাতে অপব্যবহার না হয়। এনসিপি এ প্রস্তাবকে ইতিবাচক দেখলেও স্বচ্ছ জবাবদিহির ওপর জোর দিয়েছে।
‘না’ ভোট প্রসঙ্গে ইসি প্রস্তাব করেছে—কোনো আসনে একক প্রার্থী হলে তিনি বিনা ভোটে নির্বাচিত হবেন না, বরং তাঁর বিপক্ষে ‘না’ ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকবে। বিএনপি এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, নাগরিক ঐক্য উপযোগিতা দেখছে না, আর জামায়াত ও এনসিপি সমর্থন জানিয়েছে।
জোটগত নির্বাচনে নিজস্ব প্রতীক ব্যবহারের প্রস্তাবে বিএনপি, নাগরিক ঐক্য ও এবি পার্টি একমত হলেও জামায়াত ও গণসংহতি আন্দোলন দলগুলোর স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনীকে ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে বিএনপি, এনসিপি ও জামায়াত সমর্থন জানিয়েছে। তবে এনসিপি ও জামায়াত সতর্ক করেছে যেন ক্ষমতার অপব্যবহার না হয় এবং দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব এড়ানো যায়।
ইসলামী আন্দোলন মনে করে, ইসির প্রস্তাবগুলো ভালো হলেও বাস্তবে প্রয়োগের সক্ষমতা নিয়েই আসল শঙ্কা রয়ে গেছে।