মঙ্গলবার ১৯ আগস্ট ২০২৫, ভাদ্র ৪ ১৪৩২, ২৪ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

পলাতক শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী দিয়ে বিচার চলছে

 প্রকাশিত: ২১:৪৬, ১৮ আগস্ট ২০২৫

পলাতক শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী দিয়ে বিচার চলছে

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় এখন পর্যন্ত ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১৮ আগস্ট ২০২৫) ট্রাইব্যুনালে তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা গ্রহণের পর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আগামী বুধবার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন নির্ধারণ করেন।

এর আগে চার কার্যদিবসে ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছিল।

এই মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামিম শুনানি পরিচালনা করেন। এসময় আরও কয়েকজন প্রসিকিউটর ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।

পলাতক শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অ্যাডভোকেট আমির হোসেন। মামলার একমাত্র গ্রেফতারকৃত ও ট্রাইব্যুনালে হাজির থাকা আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেয়। মামলার অন্যতম আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রোভার’ হিসেবে রাজসাক্ষী হতে আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করে।

এর আগে গত ১৬ জুন ট্রাইব্যুনাল-১ পলাতক দুই আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেয়। পরদিন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও তারা ট্রাইব্যুনালে হাজির হননি। তাই তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিযুক্ত করে অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করা হয় এবং শুনানি শেষে অভিযোগ গঠন করা হয়।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২০২৫ সালের ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল-১। একই মামলায় আসামি করা হয় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে। প্রসিকিউশন পক্ষ এই তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে পাঁচটি অভিযোগ এনে অভিযোগ গঠনের আবেদন করে।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি ছিল প্রথম।

এই মামলার বাইরেও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম ও খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অপর মামলাটি ২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের হয়।

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকার-অনুগত প্রশাসন এবং দলীয় ক্যাডারদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। এসব মামলার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২-এ চলমান রয়েছে।