মঙ্গলবার ১২ আগস্ট ২০২৫, শ্রাবণ ২৮ ১৪৩২, ১৭ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

খেলাপি কারখানা কিনে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনছে আকিজ বশির গ্রুপ

 প্রকাশিত: ১০:০৭, ১১ আগস্ট ২০২৫

খেলাপি কারখানা কিনে উৎপাদনে ফিরিয়ে আনছে আকিজ বশির গ্রুপ

খেলাপি এমিনেন্স কারখানা কিনে ১১০ কোটি টাকার দায় শোধে উদ্যোগী আকিজ বশির গ্রুপ, নভেম্বরেই উৎপাদন শুরু পরিকল্পনা

খেলাপি হয়ে পড়া এমিনেন্স ইলেকট্রিক ওয়্যার অ্যান্ড কেব্‌লস লিমিটেড কিনে নিচ্ছে আকিজ বশির গ্রুপ। এর বিনিময়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১১০ কোটি টাকার ঋণ ও অন্যান্য দায়দেনা পরিশোধ করবে গ্রুপটি।

২০১৬ সালে চার প্রকৌশলীর উদ্যোগে গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানাটি স্থাপন করা হয়। ন্যাশনাল ব্যাংকের নেতৃত্বে রূপালী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও লংকাবাংলা ফাইন্যান্সসহ চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান মিলে প্রকল্পে অর্থায়ন করেছিল। তবে ডলারের দামের উর্ধ্বগতি, চলতি মূলধনের ঘাটতি ও অতিরিক্ত ব্যয় প্রকল্পটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হওয়ার আগেই ঋণখেলাপিতে পরিণত করে। ৬৯ কোটি টাকার ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১১৫ কোটি টাকা।

সম্প্রতি আকিজ বশির গ্রুপ, এমিনেন্স ও চার অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কারখানাটি বিক্রির চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, গ্রুপটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের পাশাপাশি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, সরবরাহকারীদের বিলসহ অন্যান্য দায়দেনাও শোধ করবে। ইতিমধ্যে ঋণের একটি অংশ পরিশোধ করা হয়েছে এবং আগামী অক্টোবরের মধ্যে বাকি টাকা শোধ করে মালিকানা বুঝে নেবে আকিজ বশির গ্রুপ।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, এই উদ্যোগে আকিজ বশির গ্রুপ যেমন উৎপাদনে দ্রুত প্রবেশ করতে পারবে, তেমনি তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোও উপকৃত হবে। ন্যাশনাল ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক তাদের প্রকল্পে দেওয়া পুরো অর্থ ফেরত পাওয়ার আশা করছে।

লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়রা আজম বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে ঋণের একটি অংশ পেয়েছি, শিগগিরই বাকি অর্থও পেয়ে যাব। বড় শিল্পগ্রুপগুলো এভাবে এগিয়ে এলে কোনো কারখানা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকবে না।”

প্রকল্পটি ৬৭ হাজার ১৫০ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক তার ও কেবল উৎপাদনের সক্ষমতা নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছিল। কারখানার অবকাঠামো সম্পন্ন হলেও উৎপাদন শুরু হয়নি। আকিজ বশির গ্রুপ আগামী নভেম্বর থেকে কম ভোল্টেজের তার উৎপাদন শুরু করার পরিকল্পনা করেছে এবং পরে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন পরিসর বাড়াবে।

গ্রুপটির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) মো. খোরশেদ আলম বলেন, “আমরা স্থানীয় বাজারের চাহিদা বিবেচনা করে বড় আকারে আসার পরিকল্পনা নিয়েছি। উৎপাদন নভেম্বরেই শুরু হবে।”

এভাবে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা একটি শিল্প কারখানাকে পুনরায় চালু করার মধ্য দিয়ে আকিজ বশির গ্রুপ দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নতুন করে বিনিয়োগের পথে হাঁটছে।