সোমবার ১১ আগস্ট ২০২৫, শ্রাবণ ২৭ ১৪৩২, ১৬ সফর ১৪৪৭

রাজনীতি

ছাত্ররাজনীতি এখন ঘৃণিত, দায়ী রাজনৈতিক অপব্যবহার: নুরুল হক নুর

 প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ১০ আগস্ট ২০২৫

ছাত্ররাজনীতি এখন ঘৃণিত, দায়ী রাজনৈতিক অপব্যবহার: নুরুল হক নুর

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন নুরুল হক নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘মেধাবীদের পরিবর্তে গুন্ডা বাহিনীকে প্রতিষ্ঠিত করায় তরুণদের কাছে ছাত্ররাজনীতি ঘৃণার বিষয়ে পরিণত হয়েছে।’

রবিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে ‘আঠারো হতে চল্লিশ কোটা সংস্কার হতে রাষ্ট্রসংস্কার’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রাবি শাখা ছাত্রঅধিকার পরিষদ।

নুর বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা যে গণতান্ত্রিক রাজনীতি চাই, ছাত্রঅধিকার পরিষদ সেই পথেই অগ্রসর হচ্ছে। ১৯৯০ সালের এরশাদবিরোধী আন্দোলনে রাকসু, চাকসু, জাকসু ও ডাকসুর নেতারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে জাতিকে স্বৈরশাসকের হাত থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৯০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত যে-ই ক্ষমতায় এসেছে, তারা ছাত্র নেতৃত্ব বিকাশের উদ্যোগ নেয়নি; বরং নিজেদের স্বার্থে ছাত্রদের লাঠিয়ালে পরিণত করেছে। মেধাবীদের পরিবর্তে গুন্ডা বাহিনীকে প্রতিষ্ঠিত করায় তরুণদের কাছে ছাত্ররাজনীতি ঘৃণার বিষয়ে পরিণত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল যে, প্রচণ্ড কর্তৃত্ববাদী শাসনের মধ্যেও এত কম সময়ে একটি ছাত্র সংগঠন বড় রাজনৈতিক দলে রূপ নিয়েছে। ক্ষমতায় থেকে অনেক কিংস পার্টি তৈরি হয়েছে, কিন্তু আমরা ব্যতিক্রম। কারণ, আমরা কোনো নির্দিষ্ট আদর্শিক বা ধর্মভিত্তিক দল নই; আমরা উদারপন্থি রাজনৈতিক ধারার রাজনীতি করতে চাই।’

আলোচনা সভায় ছাত্রঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সমন্বয়ক নাজমুল হাসান বলেন, ‘যখনই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তখনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নেমেছে। ২০১৮ ও ২০২৪ সালের কোটা আন্দোলন তার প্রমাণ। ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে ওঠা গণজোয়ার ছিল উল্লেখযোগ্য।’

রাবি শাখা ছাত্রঅধিকার পরিষদের সভাপতি মেহেদী মারুফ বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে আশা-আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল, তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের নামে শুধু রূপরেখা দিচ্ছে, বাস্তবায়ন চোখে পড়ছে না। শিক্ষা খাতে বরাদ্দও অপ্রতুল। একটি দেশকে এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষা খাতকে শক্তিশালী করা জরুরি হলেও সরকার কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন—১৮-এর কোটা সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক মাসুদ মোন্নাফ, রাবি শাখা ছাত্রঅধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি নাঈমুল ইসলাম নাইম, ছাত্রঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিফুল ইসলাম সোহান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রোকেয়া জাবেদ মায়া। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন ছাত্রঅধিকার পরিষদ রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়া শুভ। এ সময় রাজশাহী জেলার বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।