রোববার ১১ মে ২০২৫, বৈশাখ ২৮ ১৪৩২, ১৩ জ্বিলকদ ১৪৪৬

ব্রেকিং

শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনের বুচা শহরে হাত-বাঁধা লাশের ছড়াছড়ি

 প্রকাশিত: ১০:৩৮, ৪ এপ্রিল ২০২২

ইউক্রেনের বুচা শহরে হাত-বাঁধা লাশের ছড়াছড়ি

কিয়েভকে অবরুদ্ধ করে প্রথম কবর রচিত হয়েছে ইউক্রেনের শহর বুচার একটি সরু রাস্তায়। সেই সময়টি আসে গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি। ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে কিয়েভের কাছে বুচা নামের ঐ শহরে পৌঁছে গিয়েছিল রুশ বাহিনী। সেখানে রাশিয়ার একটি ট্যাংক ও সাঁজোয়া বহর ইউক্রেনীয় বাহিনীর অ্যামবুশে পড়ে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়।

ইউক্রেনীয় বাহিনীর এরকম আরো অনেক প্রতিরোধ হামলায় রুশ বাহিনীর অগ্রযাত্রা থমকে যায়। পাঁচ সপ্তাহ তুমুল লড়াইয়ের পর ঐ এলাকা থেকে সরে যায় রুশ বাহিনী।

জানা যায় রুশ সেনাদের শেষ দলটি গত শুক্রবার বুচা থেকে সরে যাওয়ার পর সাংবাদিকদের একটি দল সেখানে যায়। তবে আগ্রাসন শুরুর দু' থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে রুশ বাহিনী কেন গতি হারিয়েছিল, তার একটা ধারণা পাওয়া যায় ঐ শহরের রাস্তার পরিস্থিতি দেখে।

প্রমাণ বা নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য ছাড়াই রাশিয়া বলেছিল, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে যুদ্ধের দিকে মনোযোগ বাড়ানোর জন্যই তারা কিয়েভ থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে।

মস্কোর সরকার বলছে, মধ্য ইউক্রেইনে তাদের বাহিনীর যে লক্ষ্য ছিল, তা এরইমধ্যে পূরণ হয়েছে। আসলে কিয়েভ দখলের কোনো পরিকল্পনাই তাদের ছিল না।

তবে আসল সত্যটা হলো, ইউক্রেনীয় বাহিনীর অপ্রত্যাশিত প্রবল ও সুসংগঠিত প্রতিরোধই রুশ বাহিনীকে কিয়েভের বাইরে ঠেকিয়ে দিয়েছে। বুচার রাস্তায় আগুনে পোড়া ও গলে যাওয়া দীর্ঘ সামরিক বহরই তার প্রমাণ।

যুদ্ধের দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে রুশ বাহিনীর দম বেরিয়ে গেয়েছিল। বিমানে চড়িয়ে আনা যায় এমন হালকা সাঁজোয়া যানে চেপে রুশ এলিট ছত্রীসেনারা বুচায় ঢুকেছিল।

তারা এসেছিল কয়েক মাইল দূরের বিমানবন্দর হস্টোমেল থেকে। আগ্রাসনের শুরুর দিকেই হেলিকপ্টারে নামা রুশ ছত্রীসেনারা ঐ বিমানবন্দরটিকে দখল করেছিল। কিন্তু তার পর থেকেই তাদেরকে প্রতিনিয়ত ইউক্রেনীয় বাহিনীর তীব্র প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হয়েছে।

কিয়েভের পথে রুশ সামরিক বহরটি বুচার দিকে অগ্রসর হওয়ার পরই কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হয়। শহরটিতে ঢোকার রাস্তাটি ছিল সোজা ও সরু - অ্যামুবশ করার জন্য যা ছিল উপযুক্ত।

 তারা যেটা করেছিল তা হলো রুশ বহরের সামনের এবং পেছনের যানগুলোকে ধ্বংস করে তারা বহরটিকে দু'দিক থেকে আটকে দিয়েছিল।

বুচার স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ বাহিনীর হামলায় রুশ বহরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়, অনেককে আটকও করা হয়।

রুশ বাহিনীতে বাধ্যতামূলকভাবে নিয়োগ পাওয়া তরুণ সেনারা এসব হামলায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে প্রাণ-ভিক্ষা চায় এবং তাদেরকে ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাতে তুলে না দেয়ার অনুরোধ জানায়।

তাদের জন্য আমার বেশ কষ্ট হয়েছিল। এত কম বয়সী (১৮ থেকে ২০) ছিল তারা। তাদের সামনে পড়ে আছে পুরো জীবন, বলছিলেন নিজেকে আঙ্কেল রিশা নামে পরিচয় দেয়া ৭০-এর কাছাকাছি বয়সী এক ব্যক্তি।

রুশ সেনারা তবে বুচা ছেড়ে যাওয়ার সময় মোটেও মায়া-দয়া দেখায়নি। ইউক্রেনীয় বাহিনীর সেনারা যখন শহরটিতে প্রবেশ করে তখন সেখানকার সড়কে অন্তত ২০ জনের মৃতদেহ পড়ে ছিল। অনেক মরদেহের হাত ছিল পেছন দিকে বাঁধা। শহরটির মেয়র জানান, তারা ২৮০ জনের লাশ জড়ো করে গণকবর দিয়েছেন।

রুশ বাহিনী আসার পরও যে অল্প কিছু বেসামরিক মানুষ শহরটিতে ছিলেন- তারা রুশ সৈন্যদের এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছেন। ক্রুশ্চেভ আমলের তৈরি ফ্ল্যাটের বাইরে বসে তারা কাঠ পুড়িয়ে রান্না করতেন। কারণ তাদের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইন কেটে দেয়া হয়েছিল।

স্বেচ্ছাসেবকরা এখন পশ্চিম ইউক্রেনের লাভিভ ও অন্যান্য জায়গা থেকে খাবারসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে আসছে। "৩৮ দিনে এই প্রথম রুটি খাচ্ছি আমরা, বলেছেন মারিয়া নামের এক নারী।