জানা-অজানার পথে জীবনের ভ্রমণ

বই-ভাস্কর্যে সাজানো লাইব্রেরি, পাঠকের কাছে অন্য রকম অভিজ্ঞতা
অনেক দিন পর স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জীবেন রায়। গন্তব্য হনুলুলু, হাওয়াই। সেখানে ৪০ বছর আগে তিনি করেছিলেন পোস্ট–ডক্টরাল ফেলোশিপ। পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে পুনর্মিলনের আনন্দই ছিল এবারকার ভ্রমণের প্রধান উপলক্ষ।
মিসিসিপি, আলাবামা ও টেনেসি পেরিয়ে পরিবারটি পৌঁছেছিল আরকানসাসের হট স্প্রিং শহরে। বনঘেরা ইগলুসদৃশ বাড়িতে দুই রাত থাকা ছিল এক অনন্য অভিজ্ঞতা। গরম ঝরনা আর রাস্তা ফুঁড়ে ওঠা বাষ্পে মোড়া শহরজুড়েই যেন প্রকৃতির রহস্যময়তা।
এরপর যাত্রা ডালাস, সেখান থেকে দীর্ঘ ফ্লাইটে হনুলুলু। সাত দিন শহরটিতে কাটিয়েছেন নানা দর্শনীয় স্থান ঘুরে। বাসে ভ্রমণই ছিল প্রধান ভরসা। ঘুরেছেন কুয়ালোয়া শুটিং এলাকা—যেখানে জুরাসিক পার্কসহ বহু বিখ্যাত ছবির দৃশ্য ধারণ হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল পলিনেশিয়ান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, যেখানে পুরো দিন কাটানোর মতো আয়োজন রয়েছে।
এ ছাড়া ঘুরেছেন আনারস খেত, ওয়াইকিকি সৈকত এবং দ্বীপের নানা প্রান্ত। আবহাওয়া, প্রকৃতি, ফুল–ফল—সবই তাকে মনে করিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের কথা। মানুষের সততা ও নিরাপদ পরিবেশও নজরে পড়েছে।
ফেরার পথে লস অ্যাঞ্জেলেসে দুই দিন অবস্থান। সেখানে হলিউডের সাইনবোর্ড থেকে শুরু করে তারকাদের স্বাক্ষর–ছাপ পর্যন্ত দেখা হয়ে গেছে। সবচেয়ে আলাদা অভিজ্ঞতা ছিল শহরের বিখ্যাত বইয়ের দোকান ‘দ্য লাস্ট বুকস্টোর’। ২২ হাজার বর্গফুট আয়তনের এ দোকানে আড়াই লাখ বইয়ের পাশাপাশি নানা শিল্পকর্ম ও ভাস্কর্য তৈরি হয়েছে বই ব্যবহার করে।
ভ্রমণের শেষ পর্ব ছিল ডালাসে বড়দিন উদ্যাপন। সেখানে জীবেন রায় প্রথমবারের মতো বন্দুক হাতে নিয়েছিলেন বন্দুক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। লিখেছেন, “বন্দুক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এতদিন লেখালেখি করেছি, কিন্তু জীবনে প্রথমবার নিজেই বন্দুক চালালাম।”