রায়ে ‘গণআকাঙ্খা পূরণ হয়েছে’: জামায়াত সেক্রেটারি
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাণদণ্ডের রায়ে দেশের ১৮ কোটি মানুষের গণআকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ার।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সোমবার শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতের নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, “জুলাই-অগাস্টের ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের যে ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবর্তন, আমাদের প্রায় ১৪০০ ছাত্র জনতার জীবন। প্রায় ৪০ হাজার ছাত্র-জনতা আহত হয়ে বেঁচে আছেন। তাদের আত্মত্যাগের ঐতিহাসিক অবদানকে আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।
“এটা বিচারের গুরুত্বপূর্ণ দিন, এই কারণে আমরা বলছি, দেশের ১৮ কোটি মানুষের যে গণআকাঙ্ক্ষা ছিল এই রায়, ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের আগে করে যাবেন, এটা আমাদের দাবি ছিল। সেটি পূরণ হয়েছে।”
সেখানে শেখ হাসিনা ছাড়াও তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। তিনিও তার নেত্রীর মত ভারতে পালিয়ে আছেন।
এ মামলার তিন আসামির মধ্যে সেই সময়ের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছিলেন। সেজন্য ট্রাইব্যুনাল তাকে লঘুদণ্ড হিসেবে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ছে ট্রাইব্যুনাল।
রায়ের পর ভারতের উদ্দেশ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, “হাজারের অধিক হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা এবং মৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। আপনারা (ভারত) যদি বাংলাদেশে তাকে (শেখ হাসিনা) ফিরিয়ে দিয়ে সহযোগিতা করেন তবেই বাংলাদেশের সাথে আপনাদের যে সম্পর্ক, সেই সম্পর্ক ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
“কিন্তু শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে না দিলে, বাংলাদেশের সঙ্গে, বাংলাদেশের মানুষের সাথে ভারতের সম্পর্ক কখনোই স্বাভাবিক হবে না। পাশাপাশি আমরা দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করার দাবি করছি। কারণ এই হত্যাযজ্ঞ আওয়ামী লীগেরও।”
দোর্দণ্ড প্রতাপে দেড় দশক দেশ শাসন করা হাসিনা ১৫ মাস আগের ওই অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারিয়ে এখন পালিয়ে আছেন ভারতে। তিনিই বাংলাদেশের প্রথম সাবেক সরকারপ্রধান, যার মাথার ওপর ঝুললো মৃত্যুদণ্ডের খাঁড়া।
আর সেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকেই শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ সাজার রায় এল, যে আদালত তার সরকার গঠন করেছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য।